বণিকসভার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ছবি পিটিআই।
আগেই ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লকডাউন আরও কিছু দিন বাড়তে পারে বলে মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজ্য সে-ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে বণিকসভার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে, ১৪ এপ্রিলের পরে লকডাউন বাড়বে। কেন্দ্র যে-সিদ্ধান্তই নিক, রাজ্য সহযোগিতা করবে। ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক আছে। সেখানে আমরা মতামত দেব।’’
এর পরে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘যা পরিস্থিতি, তা আমাদের মোটেই ভাল লাগছে না। কিন্তু মানুষের জীবন সবার উপরে। সুস্থ থাকতে হবে। সেই জন্য কষ্ট হলেও মানিয়ে নিতে হবে।’’ তবে জীবন-জীবিকা চালাতে লকডাউনের মধ্যেও মানবিক হয়ে সরকারকে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। মার্চের মধ্যে ফি বা নথিপত্র জমা না-দেওয়ায় যে-সব লাইসেন্স বাতিল হয়ে যেতে পারে, সেগুলির বিষয়ে অনুমতি নেওয়ার সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এ দিন চা-বাগানের জন্য বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ১৫% কর্মী দিয়ে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে, সমস্ত রকম সতর্কতা নিয়ে চা-বাগানে পাতা তোলার কাজ শুরু হতে পারে।
দেশজোড়া ঘরবন্দিদশায় বিভিন্ন জিনিসপত্র বহনে মানুষের যে বেশ সমস্যা হচ্ছে, এ দিন তার উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, যাত্রী পরিবহণেও সমস্যা হচ্ছে। সেই জন্য কলকাতার বিশেষ কয়েকটি জায়গায় সরকারি নিয়ন্ত্রণে ট্যাক্সি চলাচল ফের শুরু করা হবে। যে-সব শিল্পের ক্ষেত্রে কারখানায় লোকজন রেখে কাজকর্ম চালানো যায়, সেগুলিকেও ছাড় দেওয়ার বিষয়টি তাঁর সরকার বিবেচনা করছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।
মমতা বলেন, ‘‘করোনাভাইরাস মোকাবিলার বিশেষ তহবিলে প্রায় ৯০ কোটি টাকা জমা পড়েছে। বণিকসভাগুলি এই তহবিলে কিছু দিতে চাইলে দিতে পারেন। কিন্তু আপনারা যে-টাকা তুলবেন, তার অর্ধেক শ্রমিকদের দিন। বাকি টাকা তহবিলে দিতে পারেন। সে-ক্ষেত্রে আপনারা যে-টাকা দেবেন, আসলে তার দ্বিগুণ টাকা আপনারা খরচ করছেন বলে আমরা ধরে নেব।’’
বণিকসভাগুলিকে কলকাতা ও জেলার এক-একটি বাজারের দায়িত্ব নিয়ে হাতশুদ্ধি ও মাস্ক দেওয়ার আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী। পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইমেন্ট (পিপিই) বা বর্মবস্ত্র, মাস্ক বা মুখাবরণ, হাতশুদ্ধি তৈরির জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের বিভিন্ন কোয়রান্টিন বা নিভৃতবাস কেন্দ্রে রান্না করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করছেন কলকাতার বিভিন্ন বন্ধ হোটেল-রেস্তরাঁর কর্মীরা। হোটেল-মালিকদের পক্ষ থেকে ওই কর্মীদেরও ১০ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। সেই দাবি রাজ্য সরকার মেনে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৭১১টি শিবির খুলে ১৬টি রাজ্যের অন্তত দু’লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে প্রতিদিন খাওয়ানো হচ্ছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)