ছবি: পিটিআই।
লকডাউন অব্যাহত থাকলেও ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ বিধি শিথিলের পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। এমনিতে চতুর্থ দফার লকডাউনে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত নৈশ কার্ফু ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। কিন্তু তা আনুষ্ঠানিক ভাবে এ রাজ্যে করতে চান না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সন্ধ্যা ৭টার পরে জমায়েত দেখলে পুলিশ পদক্ষেপ করতে পারে। সোমবার তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যে কন্টেনমেন্ট এলাকাগুলিও তিন ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। যেখানে সংক্রমণ হয়েছে বা হতে পারে, তা কন্টেনমেন্ট অ্যাফেক্টেড (এ)। দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে কন্টেনমেন্ট বাফার (বি) এলাকা। যেখানে নজর রাখবে সরকার। আর তৃতীয় স্তরে রয়েছে কন্টেনমেন্ট ক্লিন (সি) এলাকা। কন্টেনমেন্ট এলাকার পরিধি কমাতে তা বুথ ও ওয়ার্ডভিত্তিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। কন্টেনমেন্ট ‘এ’ এলাকা বাদে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে বড়-মাঝারি-ছোট দোকান-অফিস খুলবে। শপিং মলের মধ্যে অফিস থাকলেও খোলা যাবে। ২৭ মে থেকে খুলবে হকার্স মার্কেট। সেখানে জোড়-বিজোড় ভিত্তিতে একদিন অন্তর দোকান খোলার হবে বলে ইঙ্গিত। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুরসভার সচিব এবং পুলিশ মার্কেট কমিটির সঙ্গে কথা বলবেন। মার্কেটে পাসের ব্যবস্থাও করবে পুলিশ। একক দোকানের পাস লাগবে না। ওই দিন থেকে দু’জন যাত্রী নিয়ে অটোরিকশা রাস্তায় নামতে পারবে।
সেলুন, বিউটি পার্লার খোলার দিকে তাকিয়ে ছিলেন অনেকে। তাঁদের স্বস্তি দিয়ে সে-সবও খোলার ঘোষণা করেছে সরকার। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত সামগ্রীর জীবাণু নাশ করে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে সেলুন, পার্লারকে। দোকান খোলার ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য-বিধি আবশ্যিক। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মতে, নিজের যত্ন নিজেকেও নিতে হবে।
আরও পড়ুন: আপনার এলাকায় এ বার কী খুলবে, কী খুলবে না, দেখে নিন বিস্তারিত
আরও পড়ুন: ফণীর মতোই বিপুল বেগে রাজ্যের ছয় জেলা লন্ডভন্ড করতে পারে আমপান
কী জ়োনে কী ছাড়
• কন্টেনমেন্ট অ্যাফেক্টেড (এ) জ়োন: সব বন্ধ।
• কন্টেনমেন্ট বাফার (বি) জ়োন: কিছু নিয়ন্ত্রণ।
• কন্টেনমেন্ট ক্লিন (সি) জ়োন: পুরোটাই খোলা।
২১ মে থেকে যা যা খুলবে
• বড়, মাঝারি, ছোট দোকান • আন্তর্জেলা বাস • সেলুন এবং বিউটি পার্লার • ৫০%
কর্মী শিল্পক্ষেত্র, বেসরকারি অফিসে। • জমায়েতশূন্য খেলা (গল্ফ, টেবল টেনিস, লন টেনিসের মতো খেলা) • শপিং মলের মধ্যে অফিস
২৭ মে থেকে চালু
• হকার্স মার্কেট
• দু’জন নিয়ে অটোরিকশা
রাজ্যে ৩১ মে পর্যন্তই লকডাউন চালু থাকছে। তবে নৈশ কার্ফু বলবৎ হচ্ছে না। সাত জনের বদলে ১৫ জনের জমায়েতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। বিধি ভাঙলে পুলিশ পদক্ষেপ করবে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মানুষকে দমবন্ধ করে টেনশনে ভোগানো উচিত নয়। সন্ধ্যা ৭টার পরে বাইরে থাকবেন না। এটা আপনাদের কাছে অনুরোধ। কার্ফু আইনটা যাতে আপনাদের উপরে বলবৎ না-হয়, মাথায় রাখবেন। কেউ সন্ধ্যা ৭টার পরে বেরোলে বা জমায়েত করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। সরকারকে যেন এমন কোনও পদক্ষেপ করতে না-হয়, যাতে মানুষের অসুবিধা হতে পারে।’’ কয়েক দিন পরেই ইদ। কঠিন হলেও বাড়িতে বসেই তা পালন করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘ইদও বাড়িতে পালন করতে হতে পারে। কোনও সম্প্রদায় নিয়ে যেন রাজনীতি করা না-হয়। অপপ্রচার যেন না-হয়।’’