প্রতীকী ছবি
অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্প ঘোষণা করেছিল রাজ্য। কার্যত সোমবারই ছিল সেই প্রকল্পের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার প্রথম দিন। এ দিনই সশরীরে আবেদনপত্র পেশের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দিল অর্থ দফতর। বলা হয়, বিডিও বা এসডিও অফিসে ফর্ম জমা দিতে ভিড় হচ্ছে। লকডাউনে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তাই পরবর্তী নির্দেশের আগে পর্যন্ত ফর্ম জমা বন্ধ থাকবে। অনলাইনে আবেদন করা যাবে কি না, তা নিয়ে কোনও নির্দেশ নেই। ফলে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট শিবিরের পর্যবেক্ষণ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘প্রচেষ্টা বন্ধ হয়নি। একটু সমস্যা চলছে। তা ঠিক করার কাজ চলছে।’’ প্রকল্পের সময়সীমা ছিল ১৫ এপ্রিল থেকে ১৫ মে। যাঁরা সামাজিক সুরক্ষা যোজনা বা সামাজিক পেনশন পান না, সেই অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকেরা ‘প্রচেষ্টা’র জন্য আবেদন করতে পারবেন। শ্রম দফতর মারফত আবেদনকারীর অ্যাকাউন্টে এক হাজার টাকা জমা পড়বে এককালীন।
সেই নির্দেশিকা মেনে এ দিন ফর্ম জমা দিতে বিভিন্ন ডিএম, এসডিও এবং বিডিও অফিসে ভিড় শুরু হয়। দু’-একটি জায়গা ছাড়া সব ক্ষেত্রেই ফর্ম পূরণ বা পেশের সুযোগ হয়নি আমজনতার। সকালেই হোয়াটসঅ্যাপ মারফত ‘প্রচেষ্টা’র ফর্ম জমা বন্ধ রাখতে সব ডিএমের কাছে নির্দেশ পাঠায় অর্থ দফতর। বিকেলে একটি লিখিত নির্দেশ পান ডিএম-রা।
মেদিনীপুর কালেক্টরেট, হাওড়ার কয়েকটি ব্লক, বাঁকুড়ার বড়জোড়া, পুরুলিয়া শহর ও কাশীপুর ব্লকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ভিড় হয় আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুর জেলার মহকুমাশাসকের দফতর ও বিডিও অফিসে। কোচবিহারের কোথাও কোথাও পুলিশ লাইনে দাঁড়ানো মানুষকে সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তবে পুলিশ তা মানতে চায়নি। হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদের কান্দিতে ‘ড্রপ বক্সে’ আবেদনপত্র জমা পড়ে। কয়েক ঘণ্টা পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।
কোথাও কোথাও রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমেই ফর্ম মিলেছে বলে অভিযোগ। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের অভিযোগ, ‘‘সরকারের স্পষ্ট ভাবনাচিন্তা ও পরিকল্পনার অভাবেই গরিব, বিপন্ন মানুষের সমস্যা বাড়ছে।’’ বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রচেষ্টা প্রকল্প স্থগিত কেন? বিপদে গরিব মানুষ। পকেটে পয়সা নেই। অসহায় মানুষকে নিয়ে ছেলেখেলা করছে সরকার।’’