তৃণমূলকে আক্রমণ ক্ষুব্ধ শুভেন্দুর।
বিধানসভায় সাসপেন্ড হয়ে যাওয়া বিজেপি-র সাত বিধায়ক আপাতত দৈনিক ভাতার টাকা পাবেন না। সেই তালিকায় রয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। বৃহস্পতিবারই বিধানসভার সচিবালয় চিঠি দিয়ে সে কথা জানিয়ে দিয়েছে ওই বিধায়কদের। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, যত দিন তাঁরা সাসপেন্ড থাকবেন তত দিন বিধানসভার কোনও স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দু বিধানসভায় যে চেম্বার পান সেখানেও যেতে পারবেন না। থাকবে না বিধানসভার লবিতে যাওয়ার অধিকার। এই চিঠি পাওয়ার পরে ক্ষুব্ধ শুভেন্দু টুইট করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি চলছে। এই প্রথম বার টানা বিরোধিতার মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী ভয় পাচ্ছেন। আর তাই বিরোধীদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে।’
সাসপেন্ড হওয়া বিধায়কদের যে স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে ডাকা হবে না সেটা আগেই বিধানসভা সূত্রে জানা গিয়েছিল। আনন্দবাজার অনলাইনে সেই খবর প্রকাশিতও হয়। এ বার জানা গেল, সাসপেন্ড হওয়া বিধায়কদের দৈনিক ভাতাও বন্ধ করে দিতে চলেছে বিধানসভা সচিবালয়। সাধারণ ভাবে এক জন বিধায়ক মাসিক ২২ হাজার টাকার মতো বেতন পান। এর উপরে প্রতি দিন দু’হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। এই ভাতার টাকাই বন্ধ রাখা হচ্ছে। শুভেন্দুর মতো একই চিঠি পেয়েছেন বিধানসভায় বিজেপি-র মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গা। মাদারহাটের বিধায়ক মনোজকেও গত ২৮ মার্চ সাসপেন্ড করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
মনোজ জানিয়েছেন, বিরোধী দলনেতা-সহ তাঁর দলের সাত বিধায়কের কাছে এমন চিঠি এসেছে। ওই তালিকায় রয়েছেন নাটাবাড়ির বিধায়ক মিহির গোস্বামী, পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়, ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মণ, জয়পুরের বিধায়ক নরহরি মাহাতো এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। এঁদের মধ্যে মিহির ও সুদীপকে আগেই রাজ্যপালের ভাষণে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছিল।
কত দিন পর্যন্ত এই ভাতা বন্ধ থাকবে? বিধানসভা সচিবালয় জানিয়েছে, যত দিন ওঁরা সাসপেন্ড থাকবেন, তত দিন ওই সুবিধা মিলবে না। অন্য দিকে, বিজেপি শিবির মনে করছে, খুব সহজে সাসপেনশন তুলবেন না স্পিকার। বিরোধী দলনেতা-সহ দলের যে বিধায়কেরা বিধানসভায় বেশি সরব হন, তাঁদের অধিবেশন ও স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকের বাইরে রাখতেই এই পরিকল্পনা করেছে তৃণমূল। গেরুয়া শিবির মনে করছে, বিধানসভার অধিবেশন যে হেতু শেষ হওয়ার পরিবর্তে মুলতুবি রয়েছে, তাই সাসপেনশন অনেক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। কারণ, নিয়ম বলছে, যত দিন না স্পিকার অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করছেন, তত দিন বাজেট অধিবেশন চলছে বলেই ধরা হবে।