Jagdeep Dhankhar

পাহাড়ে রাজ্যপালের সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠকে বিরোধী দলনেতা মান্নান

রাজ্যপাল-মান্নান একান্ত সাক্ষাৎ যে রাজ্যের শাসকদলকে ক্ষুণ্ণ করবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বস্তুত, সেটাই চাইছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২০ ১৩:২৮
Share:

কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও পক্ষই মুখ খুলতে চায়নি। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

রবিবার সকালে দার্জিলিংয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। দু’জনের মধ্যে প্রাতরাশ করতে করতে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে বলে বিরোধী শিবির সূত্রের খবর। যদিও কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও পক্ষই মুখ খুলতে চায়নি। যোগাযোগ করা হলে মান্নান শুধু বলেছেন, ‘‘আমি দলের কাজে দার্জিলিংয়ে এসেছি। রাজ্যপাল যেহেতু এখানেই আছেন, তাই বিরোধী দলনেতা হিসেবে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে দেখা করেছি। এর অন্য কোনও তাৎপর্য নেই।’’

Advertisement

মান্নান যা-ই বলুন, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা যদি রাজ্যপালের সঙ্গে গিয়ে বৈঠক করেন, তার ‘রাজনৈতিক তাৎপর্য’ ফেলে দেওয়ার মতো হতে পারে না। বিশেষত, রাজ্যপাল নিজেই যখন এ রাজ্যে নিয়মিত ‘বিরোধী’র ভূমিকা পালন করছেন। একের পর এক টুইটে তিনি নিয়মিত রাজ্যের শাসক তৃণমূল এবং রাজ্য প্রশাসনকে আক্রমণ করছেন। তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজ্যপালের কাজকর্ম নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষস্তরের নেতারা। রাজ্যপাল রাজ্য প্রশাসনকে কটাক্ষ করলেই তা খণ্ডন করছেন সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতারা। টুইটে রাজ্যপালকে পাল্টা ঝাঁঝালো আক্রমণ করছেন তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। একটি টুইটে তো তিনি রাজ্যপালকে ‘আঙ্কল’ সম্বোধন করেও কটাক্ষ করেছেন।

তাতে অবশ্য রাজ্যপালের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। তিনি নিয়মিত এবং লাগাতার তাঁর রাজ্য সরকার বিরোধিতা জারি রেখেছেন। মান্নানের তাঁর সঙ্গে বৈঠকের ‘তাৎপর্য’ এখানেই। কারণ, মিলিয়ে দেখলে দেখা যাবে, বিরোধী দলনেতা হিসেবে মান্নান যে সমস্ত বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনকে আক্রমণ করেছেন, রাজ্যপালের আক্রমণও কয়েকটি ক্ষেত্রে সেই ধারাকে অনুসরণ করেছে। ফলে রাজ্যপাল-মান্নান একান্ত সাক্ষাৎ যে রাজ্যের শাসকদলকে ক্ষুণ্ণ করবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বস্তুত, সেটাই চাইছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির। বিধানসভা ভোটের আগে বিভিন্ন ‘ফ্রন্ট’ খুলে তারা শাসক শিবিরকে বিব্রত করতে চাইছে। পাহাড়ে দলীয় কাজে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে মান্নানের প্রাতরাশ বৈঠকেও তারই অঙ্গ বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।

Advertisement

আরও পড়ুন: একবালপুরে তরুণী খুনে ধৃত দম্পতি, প্রেম না মাদকযোগ, তদন্ত করছে পুলিশ​

আরও পড়ুন: রোগীর অস্ত্রোপচার করতে পারবেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরাও, ছাড়পত্র কেন্দ্রের​

পাহাড় সফরে মান্নান স্থানীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলবেন বলে খবর। তাঁর উদ্দেশ্য— বিজেপি বা তৃণমূল ছাড়া কোনও তৃতীয় বিকল্প পাহাড়ে তৈরি করা সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখা। একদা দার্জিলিং পাহাড়ে কংগ্রেস এবং সিপিএমের প্রভাব থাকলেও বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে তারা সমতলেই কোণঠাসা হয়ে রয়েছে। সে অর্থে পাহাড়ে তাদের কোনও প্রভাবই নেই। এই পরিস্থিতিতে বিমল গুরুং বিজেপি থেকে তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন। আবার ‘বিজেপি-ঘনিষ্ঠ’ গুরুং পাহাড়-ছাড়া হওয়ার পর সেখানে নেতা হিসাবে উত্থান হয়েছে বিনয় তামাংয়ের। ফলে পাহাড়ের জনতার গুরুং শিবির-তামাং শিবিরে বিভক্ত হওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সেই পরিস্থিতিটা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করাও মান্নানের লক্ষ্য বলে বিরোধী শিবির সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement