মার্চে এক বার তালিকা চাওয়া হয়েছিল। লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই আবার রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে কর্মরত আংশিক সময়ের, চুক্তিভিত্তিক এবং অতিথি শিক্ষকদের মধ্যে যাঁরা নেট, সেট পরীক্ষা উত্তীর্ণ অথবা পিএইচ ডি, এমফিল করেছেন, তাঁদের তালিকা চেয়েছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। নির্দেশে বলা হয়েছে, গত দু’বছরের মধ্যে (চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত) যে-সব শিক্ষক-শিক্ষিকা অন্তত এক বছর কাজ করেছেন, তাঁদের ওই তালিকায় রাখতে হবে।
মাস তিনেকের মধ্যে বার দুয়েক এমন তালিকা চাওয়ার মধ্যে ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকা বিশেষ কোনও আশ্বাস দেখছেন না। উল্টে গোটা বিষয়টি নিয়েই তাঁরা খানিকটা বিভ্রান্ত। পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের সমান কাজ করেও কেন তাঁদের যৎসামান্য পারিশ্রমিক দেওয়া হয়, সেই প্রশ্ন তুলে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। বেতন বৃদ্ধির দাবি না-মানলে পরের মাস থেকেই তাঁরা ফের আন্দোলনে নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই শিক্ষকদের একাংশ।
রাজ্যের অতিথি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোপালচন্দ্র ঘোষ জানান, গত মার্চে সরকার এক বার কর্মরত আংশিক সময়ের, চুক্তিভিত্তিক এবং অতিথি শিক্ষকদের তালিকা চেয়েছিল কলেজগুলির কাছে। সে-বার অবশ্য নেট, স্লেট, পিএইচ ডি, এমফিলের আলাদা ভাগ ছিল না। শিক্ষকদের দাবিদাওয়ার কোনও সুরাহা হয়নি। তার মধ্যেই আবার তালিকা চাওয়া হল। এমন আচরণের প্রতিবাদে আগামী রবিবার হাজরা মোড়ে অবস্থান-বিক্ষোভ করবেন তাঁরা। তার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়ে স্মারকলিপি পেশের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এর আগে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। ‘‘সেই সময় আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের আলোচনার ব্যবস্থা হবে। কিন্তু তা হয়নি। এর পরে আবার তালিকা চাওয়া হচ্ছে। এ-সবে আমাদের কোনও বিশ্বাস নেই,’’ সোমবার বলেন গোপালবাবু।
সম কাজে সম বেতন ও পূর্ণ সময়ের কাজের স্বীকৃতির দাবিতে কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (কুটাব) দীর্ঘদিন আন্দোলন করে চলেছে। কুটাবের নেতা গৌরাঙ্গ দেবনাথ এ দিন জানান, এই ধরনের তালিকা চাওয়ায় মধ্যে তাঁরা কোনও আশার আলো দেখছেন না। এই সপ্তাহেই তাঁরা তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন। যদি অবিলম্বে তাঁদের বেতন বৃদ্ধি না-হয়, জুলাইয়ের প্রথম থেকে তাঁরা আবার আন্দোলনে যাবেন।