রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে এক উপভোক্তা। —ফাইল চিত্র।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে গরমিল এবং বেনিয়ম ঠেকাতে এ বার আরও উন্নত পরিষেবা চালু করছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্যসাথী অ্যাপে ব্যবহার করা হবে ‘জিয়ো ট্যাগিং’ (কোনও তথ্যের সঙ্গে ভৌগোলিক অবস্থান সংযুক্তিকরণ) এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কোনও রোগীর জন্য পরিষেবা কখন শুরু হচ্ছে, কখন শেষ হচ্ছে— তার ‘রিয়েল টাইম’ তথ্য যুক্ত হবে স্বাস্থ্যসাথীর মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে। এর জন্য ব্যবহার হবে ‘জিয়ো ট্যাগিং’। তার পর সেই তথ্য খতিয়ে দেখতে নেওয়া হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য। যদিও এই বিষয়গুলির সঙ্গে রোগীদের সরাসরি কোনও যোগ নেই। রোগী পরিষেবার পর বেসরকারি হাসপাতালগুলি যখন সরকারের থেকে টাকা দাবি করবে, সেই সময়ের জন্যই মূলত প্রক্রিয়াগুলি কাজে লাগবে।
স্বাস্থ্য দফতর সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে কোনও বেসরকারি হাসপাতালে রোগী পরিষেবার ‘রিয়েল টাইম’ তথ্য সংগ্রহ করা হবে ‘জিয়ো ট্যাগিং’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। স্বাস্থ্যসাথীর ট্রানজ়াকশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (টিএমএস) বা আর্থিক লেনদেনের সময়ে ওই রিয়েল টাইম তথ্যই ব্যবহার করা হবে। হাসপাতালে কোন কোন রোগী ভর্তি রয়েছেন, সেই তথ্য-সহ মোবাইল অ্যাপটি কেবলমাত্র ওই হাসপাতালের ৫০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যেই ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ, হাসপাতাল চত্বরের বাইরে ওই অ্যাপ ব্যবহার করা যাবে না। রোগী পরিষেবা সংক্রান্ত ‘রিয়েল টাইম’ তথ্য এক বারই যুক্ত হবে অ্যাপে। তার পরে সেটিকে আর সম্পাদনা (এডিট) করা যাবে না। একই রোগীর জন্য ওই তথ্য নতুন করে যুক্তও করা যাবে না।
স্বাস্থ্যসাথী অ্যাপটি সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের নিজস্ব লগ ইন তথ্য দিয়ে একাধিক অ্যানড্রয়েড মোবাইলে ব্যবহার করা যাবে। এ ক্ষেত্রে কোনও সীমাবদ্ধতার কথা জানায়নি স্বাস্থ্য দফতর। তবে অ্যাপ্লিকেশনটি কাজ করবে কেবলমাত্র হাসপাতাল চত্বরে (জিয়ো ট্যাগ হওয়া অঞ্চলের ৫০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে)। মোবাইল অ্যাপে যুক্ত হওয়া তথ্য যাচাই করতে ব্যবহার করা হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই টুল)। প্রক্রিয়ায় কোথাও কোনও বেনিয়ম বা বিকৃতি ধরা পড়লে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের গাইডলাইন অনুসারে শাস্তিমূলক পদক্ষেপও করা হতে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় তালিকাভুক্ত বেসরকারি হাসপাতালে উপভোক্তাদের ভর্তুকিযুক্ত পরিষেবা দেওয়া হয়। ওই ভর্তুকির টাকা পরে সরকার থেকে দেওয়া হয় হাসপাতালগুলিকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রোগী পরিষেবার জন্য টাকা আদায়ের সময়ে তথ্য বিকৃত করে বর্ধিত টাকা দাবি করার সুযোগ থেকে যেত হাসপাতালগুলির। প্রযুক্তিগত সুবিধা ব্যবহার করে এ বার সেই ফাঁকফোকরগুলি বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।