মধ্য কলকাতায় প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মধ্য কলকাতায় সভা এবং মিছিল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল হাই কোর্ট। এতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয় বলে জানিয়েছে আদালত। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন, আগামী দিনে তিনি মধ্য কলকাতায় কোনও সভা-সমিতি বা কর্মসূচির অনুমতি দেবেন না। এর জন্য বিকল্প জায়গার কথাও বলেছেন বিচারপতি।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে একটি মামলা করা হয়েছিল। ওয়েলিংটন স্কোয়ার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত মিছিলের অনুমতি চেয়ে হাই কোর্টে যান মামলাকারী। অভিযোগ, পুলিশ ওই মিছিলের অনুমতি দেয়নি। বুধবার এই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি ঘোষের বেঞ্চে। তিনি কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে এই ধরনের কর্মসূচি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিচারপতি বলেন, ‘‘মধ্য কলকাতায় কাউকে কর্মসূচির অনুমতি দেব না। তাতে মানুষের অসুবিধা হয়।’’ তা হলে কোথায় কর্মসূচি হবে? বিকল্প হিসাবে নিউ টাউনের কথা বলেছেন বিচারপতি ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতা ধীরে ধীরে নিউ টাউনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। রাজ্যকে বলব, নিউ টাউনের কোনও একটি এলাকা নির্দিষ্ট করা হোক, যেখানে কর্মসূচি করা যেতে পারে।’’ নিজের শৈশবের কথা উল্লেখ করে বিচারপতি ঘোষ এর পর বলেন, ‘‘আমি নিরপেক্ষ ভাবে বলছি, এই শহরে আমার শৈশব কেটেছে। ফলে এই সব বিষয়ে সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা আমি জানি।’’
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে শহরে অবশ্য মিছিলের অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি। জানিয়েছেন, ১৬ জানুয়ারি ১০০ জন লোক নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করা যাবে ওয়েলিংটন স্কোয়ার থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত। কর্মসূচি শেষে আন্দোলনকারীদের পাঁচ জন সদস্য রাজ্যের আইন সচিবের কাছে তাঁদের বক্তব্য জানাতে পারবেন।
মামলাকারীদের আইনজীবী শামিম আহমেদ আদালতে জানান, প্রতিবাদ জানানো যে কোনও নাগরিকের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার। সেখানে বাধা দেওয়া যায় না। তা সত্ত্বেও পুলিশ মিছিলের অনুমতি দিচ্ছে না। রাজ্যের আইনজীবী শীর্ষণ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা সওয়াল, ওই কর্মসূচির জন্য পুলিশের কাছে সঠিক পদ্ধতিতে আবেদনই করা হয়নি। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ সেনাবাহিনীর জায়গা। সেখানে কর্মসূচি করতে গেলে সেনাবাহিনীর অনুমতি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেই অনুমতি আয়োজকেরা দেখাতে পারেননি, জানায় রাজ্য। সরকারের আইনজীবীর আরও বক্তব্য, প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজকেরা প্রথমে নবান্ন অভিযানের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু এই মামলায় হাওড়া পুলিশকেও যুক্ত করা হয়নি।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ১৬ তারিখ শর্তসাপেক্ষে মিছিলের অনুমতি দিয়েছে আদালত। কিন্তু সেই সঙ্গে মধ্য কলকাতায় বার বার মিছিল নিয়েও বিচারপতি অসন্তোষ প্রকাশ করলেন।