Mamata Banerjee

বাংলার পুলিশ যথেষ্ট দক্ষ, যত কেন্দ্রীয় বাহিনী পারে দিক, লড়ে নেব, জিতে নেব, বললেন মমতা

পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে রাজ্য পুলিশের উপরেই ভরসা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ১৭:০২
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ঘিরে আইনি লড়াই চলেছে। সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই আবহে রাজ্য পুলিশের প্রশংসা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যে কোনও রাজ্যের পুলিশের থেকে যথেষ্ট দক্ষ বাংলার পুলিশ।’’ ঘটনাচক্রে, তিনি রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীও বটে। যদিও বৃহস্পতিবার কমিশন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি লিখে ৮০০ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে।

Advertisement

বিরোধী জোটের বৈঠকে বৃহস্পতিবার পটনা যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিমানবন্দরে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সেখানেই মমতা রাজ্য পুলিশের উপর তাঁর আস্থার কথা বলেন। রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। সেই কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবিতে প্রথম থেকেই সরব তারা। পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে মামলা-মোকদ্দমার আবহে রাজ্য পুলিশের উপরেই যে তাঁর অগাধ আস্থা রয়েছে, সেই ভরসার বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করাতে তাদের আপত্তি না-থাকার কথা প্রথম থেকেই জানিয়েছে তৃণমূল। এ বার মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর পুলিশে আস্থা রাখলেন।

আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবিতে প্রথম থেকেই সরব বিরোধীরা। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন-পর্ব ঘিরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রাণহানি, রক্তপাত, বোমাবাজি, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই আবহে রাজ্যের সব জেলাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রথমে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ জানিয়েছিলেন, আদালতের নির্দেশ মতোই পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু পরে সেই অবস্থান বদল করে কমিশন। হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। গত মঙ্গলবার সেই মামলায় রাজ্য এবং কমিশনের আবেদন খারিজ করে হাই কোর্টের নির্দেশই বহাল রেখেছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু তার পরও বাহিনী নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটেনি। আদালতের নির্দেশের পরে পঞ্চায়েত ভোটে ২২টি জেলার জন্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল কমিশন। বুধবার সেই বাহিনী চাওয়া নিয়ে হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কমিশন। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য রাজ্যে অন্তত ৮২ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে আনতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। এই আবহে রাজ্য পুলিশের দক্ষতার বিষয়টি তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

বিরোধীদের বৈঠকে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে পটনা রওনা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পটনা যাওয়ার আগে মমতা আরও বলেন, ‘‘যত (কেন্দ্রীয় বাহিনী) পারে তত দিক। তার সংখ্যা মানুষের থেকে বেশি হবে না। যাদের ভোট দেওয়ার তাঁরা ভোট দেবেন। যাই করুক, শেষ কথা বলবে মানুষ, আমরা জিতব।’’ কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে গত শুক্রবার কাকদ্বীপে দলীয় সমাবেশেও সরব হয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী এলে মা-বোনেরা হাতা খুন্তি দিয়ে আলুভাজা, ভাত-আলুসেদ্ধ খাইয়ে দেবেন। বুঝেছেন? সারা বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী বলে দিল ( হাই কোর্ট), চলে এসো ঢাল তরোয়াল নিয়ে! কাঁচকলা করবে ঢাল, তরোয়াল নিয়ে।’’

রাজনৈতিক ভাবে না পেরে ‘যা খুশি করা হচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘ভোটটা মানুষ দেবে। রাজনৈতিক ভাবে না পেরে, বিভিন্ন এজেন্সিকে দিয়ে যা খুশি করছে। আমরা লড়ে নেব, জিতে নেব। শান্তিপূর্ণ ভাবে কমিশনের নির্দেশ মেনে সবটা হবে।’’ রাজ্যে মনোনয়ন-পর্ব শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে বলে আবার দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ত্রিপুরার নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, ‘‘এত শান্তিপূর্ণ মনোনয়ন আগে কখনও হয়নি। ত্রিপুরায় তো ৯৬ শতাংশ আসনে নির্বাচনই হয় না। এখানে ২ লক্ষ ৩৬ হাজার মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। মাত্র চারটি বুথে গোলমাল হয়েছে। একটি বুথে আমাদের দু’জন খুন হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement