WB Panchayat Election 2023

নির্বাচন চলছে কি? পদে রয়েছেন কি কমিশনার? পঞ্চায়েত মামলায় প্রশ্ন বিচারপতি অমৃতা সিংহের

কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল, মনোনয়ন পর্ব এবং স্ক্রুটিনি শেষ হয়েছে। কমিশনের ওয়েবসাইটে আইএসএফ প্রার্থীদের নাম না-থাকার মামলাটি আর গ্রহণ করা উচিত নয় কোর্টের। সেই প্রসঙ্গেই এই প্রশ্ন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ১৫:২৮
Share:

বিচারপতি অমৃতা সিংহ। — ফাইল ছবি।

রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে বুধবার ভর্ৎসনা করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, আদালতের নির্দেশ পালন করতে না চাইলে কমিশনার রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ইস্তফা দিতে পারেন। এ বার বিচারপতি অমৃতা সিংহের প্রশ্ন, রাজ্যে নির্বাচন কি চলছে? কমিশনার কি তাঁর পদে রয়েছে? নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ভাঙড়ের আইএসএফ প্রার্থীদের নাম উধাও হয়েছে। এ নিয়ে বুধবার মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল, মনোনয়ন পর্ব এবং স্ক্রুটিনি শেষ হয়েছে। এই অবস্থায় মামলাটি গ্রহণ করা উচিত নয় আদালতের। বৃহস্পতিবার তার প্রেক্ষিতেই বিচারপতি সিংহ ওই প্রশ্ন তুলেছেন।

Advertisement

বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, আদালতের কেন্দ্রীয় বাহিনী সংক্রান্ত নির্দেশ পালন করতে না চাইলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ইস্তফা দিতে পারেন। তার পরেই রাতে জানা যায়, রাজীবের যোগদান রিপোর্ট ফেরত পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। প্রশ্ন ওঠে, এর পরেও কি কমিশনার পদে থাকতে পারবেন রাজীব? পঞ্চায়েত ভোটে কি অনিশ্চয়তা দেখা দেবে? যদিও ভোটপ্রক্রিয়ায়— মনোনয়ন জমা দেওয়া, তা প্রত্যাহার করা, এ সব পর্ব পেরিয়ে ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা প্রকাশ করে ফেলেছে রাজীবের নেতৃত্বাধীন রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তা নিয়েও বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে। মামলা হয়েছে। তেমনই একটি মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি সিংহ প্রশ্ন তুলেছেন কমিশনারের ভূমিকা নিয়ে।

বৃহস্পতিবার শুনানির সময়ে আদালত কক্ষের কথোপকথন—

Advertisement

কমিশনের আইনজীবী: মনোনয়ন পর্ব এবং স্ক্রুটিনি শেষ হয়েছে। এই অবস্থায় মামলাটি গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত নয়।

বিচারপতি: গত কাল থেকে এখনও কপি পায়নি কমিশন? হাই কোর্টের এক তলা থেকে দ্বিতলে যেতে কত সময় লাগে? নির্বাচন কি চলছে? কমিশনার কি পদে রয়েছেন? শুনলাম রাজ্যপাল জয়েনিং রিপোর্টের ফাইল ফেরত পাঠিয়েছেন।

কমিশনের আইনজীবী: সবই রটনা। নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে। কমিশনার তাঁর পদে রয়েছেন।

তৃণমূলের আইনজীবী: নির্বাচনের এই মুহূর্তে এই মামলা গ্রহণ করা উচিত নয়। ইলেকশন পিটিশন করা যেতে পারে।

বিচারপতি: আমি অনেক নির্দেশই পাশ করেছি। সবগুলিই দেখুন। পুলিশ ‘এসকর্ট’ করে মনোনয়ন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। তার পরেও মনোনয়ন জমা হয়নি। আপনারা এখানে অন্য কথা বলছেন। তৃণমূল স্তরের পরিস্থিতি অন্য কথা বলছে। সেখানে কী হচ্ছে তা দেখুন।

তৃণমূলের আইনজীবী: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে শংসাপত্র নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এর পর অভিযোগ থাকলে ইলেকশন পিটিশন করতে পারেন। কিন্তু এখন কী ভাবে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে?

বিচারপতি: সেখানে কত জনকে জয়ী হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে?

মামলকারী বেশকা মণ্ডলের আইনজীবী: ভাঙড়-২ ব্লকের আইএসএফ প্রার্থীর নাম ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে না। এখন কারা জয়ী কমিশন বলতে পারবে।

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রার্থীদের নাম কেন নেই এই প্রশ্ন তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আইএসএফ এবং বামেরা। আদালতকে তারা জানায়, মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শেষ। এমনকি, স্ক্রুটিনির কাজ সম্পূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও প্রার্থীদের নাম কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে না। এই প্রসঙ্গেই মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে ভাঙড়ে অশান্তি, বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়া এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করার কথাও শুনানিতে টেনে আনেন মামলকারীরা। সে প্রসঙ্গেই বিচারপতি সিংহ বুধবার মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘একটি নির্বাচন ঘিরে এত অভিযোগ। এটা রাজ্যের পক্ষে লজ্জার! রাজ্যের উচিত, আদালতের নির্দেশ মতো আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। তা না হলে বা অশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’’ পরের দিন তিনি প্রশ্ন করেন, নির্বাচন কি চলছে?

গত ২০ জুন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থীদের পঞ্চায়েত রিটার্নিং অফিসার শংসাপত্র দিয়েছেন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থীদের মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। শুক্রবার মামলার পরবর্তী শুনানি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement