BJP

বিজেপির নতুন হাতিয়ার ‘রেডিয়ো’ শক্তি, পরিকল্পনা তৈরি ‘মোদীর দূত’ শুভেন্দু, সুকান্তদের

ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল তিন মাসের জন্য পরিকল্পনাও পাকা করে ফেলেছেন সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা। জেলায় জেলায় চলে গিয়েছে নির্দেশ। রাজ্য নেতাদেরও অংশ নিতে হবে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৩৩
Share:

অভিনব পথ বিজেপির।

প্রথমে পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং তার পরে পরেই লোকসভা ভোট। দ্বিতীয়টিই রাজ্য বিজেপির পাখির চোখ হলেও প্রথমটির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য বিজেপি। আর লেই প্রস্তুতিতে বড় ভূমিকা নেবে রেডিয়ো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতি মাসের শেষ রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান করেন। তা সম্প্রচারিত হয় রেডিয়োর মাধ্যমে। এ বার সেই অনুষ্ঠানকে জেলা থেকে শহর হয়ে গ্রামের বুথে বুথে নিয়ে যেতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। এর জন্য ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল তিন মাসের জন্য পরিকল্পনাও পাকা করে ফেলেছেন সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা।

Advertisement

জানুয়ারির ২০ এবং ২১ তারিখ দুর্গাপুরে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বৈঠকে বসে। প্রথম দিন ছিল পদাধিকারীদের বৈঠক এবং পরের দিন রাজ্য কর্মসমিতির। দ্বিতীয় দিনে রাজ্য বিজেপির তরফে রাজনৈতিক প্রস্তাব বেশ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। একই দিনে রাজ্য দলের অর্থনৈতিক প্রস্তাব পেশ করেন বালুরঘাটের বিধায়ক অশোক লাহিড়ী। তবে রাজ্য সভাপতি সুকান্তের নেতৃত্বে ওই বৈঠকে মূলত আলোচনা হয় কী ভাবে বুথ স্তরে সংগঠন মজবুত করা যায়।

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানেই ঠিক হয়েছে মোদীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানকে হাতিয়ার করা হবে সংগঠন বিস্তারের জন্য। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই এই অনুষ্ঠান শুরু করেন মোদী। সেই বছর ৩ অক্টোবর শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের ৯৭তম পর্ব সম্প্রচারিত হয়েছে গত ২৯ জানুয়ারি। সেই হিসাবে এপ্রিল মাসে শততম পর্ব শোনা যাবে।

Advertisement

সেই শততম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানকে সামনে রেখেই কর্মসূচি সাজিয়েছে রাজ্য বিজেপি। জানুয়ারি মাসের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, দলের প্রতিটি মণ্ডলে একটি করে জমায়েত করতে হবে। এর পরে ফেব্রুয়ারি মাসে মণ্ডল কেন্দ্রের পাশাপাশি সব শক্তিকেন্দ্রে সম্প্রচার করতে হবে। প্রসঙ্গত, বিজেপির সাংগঠনিক হিসাবে দশটি বুথ নিয়ে তৈরি হয় একটি করে শক্তিকেন্দ্র। মার্চ মাসের ‘মন কি বাত’ মণ্ডল কেন্দ্র, শক্তিকেন্দ্রের পাশাপাশি বুথ স্তরে নিয়ে যেতে হবে। আর এপ্রিল মাসের অনুষ্ঠান যে হেতু শততম, তাই প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় কমপক্ষে ১০০টি বুথে সম্প্রচারের ব্যবস্থা করতেই হবে।

এই নির্দেশ ইতিমধ্যেই রাজ্য বিজেপির তরফে সব জেলাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, স্থানীয় সাংসদ, বিধায়কদের সঙ্গে নিয়েই এই কাজ করতে হবে। যে রাজ্য নেতার বাড়ি যে বিধানসভা এলাকায়, তিনিও সেখানে এই কর্মসূচি রূপায়ণে উদ্যোগী হবেন। আগে থেকেই ঠিক করে রাখতে হবে কোন নেতা কোন বুথে যাবেন। আগে থাকতে নেতাদের এই সংক্রান্ত অ্যাপ ডাউনলোড করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ, প্রতি মাসেই কেমন হল অনুষ্ঠান, তার বিবরণ এবং ছবি ওই অ্যাপে আপলোড করা বাধ্যতামূলক।

বুথ স্তরে সংগঠন বাড়ানোর জন্য রাজ্য বিজেপির উপরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের চাপ চলছেই। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্য বিজেপি ঠিক করেছে, ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই সব বুথে কমিটি তৈরি করে ফেলতে হবে। প্রতিটি বুথে একটি করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে ফেলতে হবে। আর সেটা হয়ে গেলে গুজরাত, উত্তরপ্রদেশের অনুকরণে বাংলাতেও তৈরি করতে হবে ‘পৃষ্ঠা-প্রমুখ’। বুথ অনুযায়ী ভোটার লিস্টের প্রতিটি পৃষ্ঠার জন্য একজন করে নেতাকে দায়িত্ব দেওয়াই লক্ষ্য। হিন্দিভাষী রাজ্যে এই ‘পৃষ্ঠা-প্রমুখ’কে ‘পন্না-প্রমুখ’ বলা হয়। তাঁদের কাজ, একটি পাতায় যত ভোটার রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং বিজেপির বক্তব্য তুলে ধরা। এত দিন বাংলায় সংগঠন এত নিচুস্তরে নামানোর কথা ভাবেনি রাজ্য বিজেপি। এই প্রথম সেটাই করতে চাইছে গেরুয়া শিবির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement