বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ছাতার তলায় আশ্রয়। ছবি: পিটিআই।
স্থলভূমিতে ঢোকার পর থেকে ধীর গতিতে এগোচ্ছে নিম্নচাপ। তার ফলে আগামী বুধবার পর্যন্ত রাজ্যের নানা জেলায় বৃষ্টি হতে পারে বলে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে।
নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর গাঙ্গেয় বঙ্গ থেকে বর্ষার বিদায় নেওয়ার কথা। কিন্তু এ বার যা পরিস্থিতি, তাতে সময় পেরিয়ে পুজোতেও বর্ষা হাজির থাকবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা আছে।
প্রসঙ্গত, অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে বর্ষা বিদায় নিয়েছে, এমন উদাহরণও গত এক দশকের মধ্যে আছে। তাই এ বার বর্ষার বিদায়ে বিলম্ব হলে তা বিরল ঘটনা বলে মানতে নারাজ আবহবিদদের অনেকেই। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এ বার বর্ষা আসতেও কিন্তু দেরি হয়েছিল। তা হলে কি বর্ষা নিয়েই পুজো কাটবে? নিশ্চিত করে এমন কথা বলতে নারাজ আবহবিদরা।
রবিবার হাওয়া অফিস যে পূর্বাভাস দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, আগামী দু’দিন গাঙ্গেয় বঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ছাড়াও ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বুধবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো পশ্চিমের জেলাতেও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। এ দিন থেকেই উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির দাপট বেড়েছে। আগামিকাল, মঙ্গলবার কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কা আছে। সাগর উত্তাল থাকায় আগামিকাল, মঙ্গলবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রযাত্রায় নিষেধ করা হয়েছে।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার গাঙ্গেয় বঙ্গে প্রবেশ করেছিল নিম্নচাপটি। রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল এবং সংলগ্ন ঝাড়খণ্ডের উপরে রবিবার তার অবস্থান ছিল। খুব ধীর গতিতে সে উত্তর-পশ্চিম দিকে সরছে। তার ফলেই পশ্চিমি জেলাগুলিতে আপাতত বৃষ্টি বেশি হবে। আবহবিদেরা জানান, মৌসুমি অক্ষরেখার সুবাদে জোরালো বৃষ্টি পাবে উত্তরবঙ্গ। এ দিকে নিম্নচাপটি পশ্চিম দিকে সরে যেতেই কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে বৃষ্টির দাপট কমেছে। এ দিন শরতের আকাশও চোখে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, শনিবারই মৌসম ভবনের ক্যালেন্ডারে বর্ষা শেষ হয়েছে। তারা জানিয়েছে, এ বার ঘাটতি মাথায় নিয়েই বর্ষা শেষ করেছে দক্ষিণবঙ্গ। তাই এই জোরালো বৃষ্টিতেও বর্ষার হিসেবে কিছুই যোগ হবে না বলে আবহবিদেরা জানিয়েছেন। এ দিকে মৌসম ভবনের ক্যালেন্ডারে বর্ষা শেষ হলেও দেশের অর্ধেক এলাকা থেকে এখনও বর্ষা বিদায় নেয়নি। এ দিন মৌসম ভবন জানিয়েছে, বর্ষার বিদায় পর্বে এ বার বেশ বিলম্ব হচ্ছে। অক্টোবর মাস পড়ে গেলেও এখনও শুধু উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকেই বর্ষা বিদায় নিয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে আবহবিদেরা জানান, উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে বর্ষা বিদায় নিতে আরও দিন কয়েক লাগবে। সাধারণত, ৫ অক্টোবর পুরো উত্তর ভারত থেকে বর্ষা বিদায় নেয় এবং পূর্ব ভারতে তার বিদায় পর্ব শুরু হয়।
আবহবিদেরা বলছেন, অনেক সময়ই দখিনা বাতাসের ঠেলায় উত্তুরে হাওয়া জোর পায় না। বঙ্গোপসাগর থেকে ঢোকা হাওয়া দুর্বল হলেই অনেক সময় উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা বাতাস বর্ষাকে তড়িঘড়ি পাততাড়ি গুটোতে বাধ্য করে। তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে মা দুর্গা আসার আগেই বাংলা ছেড়ে পালাতে পারেন বরুণদেব।