সৈকতে মাইকে প্রচার করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
ফণির পর দিঘায় ঘূর্ণিঝড়ের সর্তকতা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যে কোনও মুহূর্তে দিঘা উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে বলে বৃহস্পতিবার সৈকতে মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে দিঘা থানার পক্ষ থেকে এই সতর্কতা প্রচার করা হয়। মূলত মৎস্যজীবী, পর্যটক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে।
মৎস্যজীবীদের আগামী ২৪ ঘন্টা সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যে সব মৎস্যজীবী ইতিমধ্যেই সমুদ্রে রয়েছেন তাঁদেরও দ্রুত উপকূলে ফিরে আসতে বসা হয়েছে। পর্যটকদেরও সমুদ্রে স্নানে বা সমুদের নামতে নিষেধ করা হয়েছে। কোনওরকম সমস্যা হলে সৈকতে থাকা পুলিশ সহায়তা কেন্দ্রের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে এদিন পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকেন।
তবে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক বার্তায় দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের অনেকেই হতাশ। হাওড়ার আমতা থেকে পরিবার নিয়ে মঙ্গলবার দিঘায় বেড়াতে এসেছিলেন দিনেশ দোলই। তিনি বলেন, “আরও কয়েকদিন দিঘায় থাকার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ঝড় আসছে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তাই ঝুঁকি নিতে চাই না। বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’’ হুগলির বৈশাখী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের নিয়ে দিঘায় এসেছিলাম। কিন্তু সমুদ্রে স্নান করতে পারব না জেনে সকলেই হতাশ। সমুদ্রের টানেই তো দিঘায় আসা। পুরীতে ফণির পরিণাম কাগজে, টিভিতে দেখেছি। তাই ঝুঁকি না নিয়ে, ফিরে য়াবে ঠিক করেছি।’’ সৈকতের এক খাবার দোকানের মালিক বলেন, “ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সতর্কতা জারির পর দোকান বন্ধ রাখব ভাবছি। পর্যটকরা যদি না থাকেন ব্যবসা চলবে কী করে?’’
দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে খবর, গত কয়েকদিন ধরে সমুদ্রে খারাপ আবহাওয়া চলায় বহু ট্রলার উপকূলে ফিরে এসেছিল। বেশ কয়েকদিন মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ায় মৎস্যজীবীরা ফের সমুদ্রে গিয়েছেন। সংগঠনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, “পুলিশের সতর্কবার্তা ঘোষণার পর আমরা ওয়্যারলেস বার্তায় সমুদ্রে থাকা ট্রলারগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। তাঁদের ফিরে আসতে বলা হবে।’’
সব মিলিয়ে ফণির পর ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা ঘিরে তৎপর দিঘা। পুলিশ-বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি আপৎকালীন যাবতীয় প্রস্তুতি রাখা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।