বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।
তাঁর একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রবীন্দ্রনাথের স্বপ্নের মাটিতে হয়েছে রাজনীতির কাদা ছোড়াছুড়ি। সেখানেও তাঁর ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এ হেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর গলায় আচমকা শোনা গেল আক্ষেপের সুর! বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য তিনি ধরে রাখতে পারেননি বলে মন্তব্য করলেন উপাচার্য।
রবিবার রামকিঙ্কর মঞ্চে ‘ভুল রাস্তা’ শীর্ষক একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। নাটকের শেষে শিল্পীদের অভিনন্দন জানাতে গিয়ে কার্যত আক্ষেপের সুর ঝরে পড়ল উপাচার্যের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি বরাবরই বলে এসেছি বিশ্বভারতী আমাদের সকলের। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে ঐতিহ্য রেখে গিয়েছেন, তাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। কিন্তু আমরা সেই দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য রক্ষা করতে পারিনি আমরা। রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীকে ধরে রাখতে পারিনি। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর বড় দায়িত্ব রয়ে গেল।’’
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত অবস্থায় ২০০৭ সালে যৌন হেনস্থায় নাম জড়ায় বিদ্যুতের। তাঁকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য নিয়োগ করা নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক। সেই আগুনে ঘি ঢালে তাঁর একের পর এক সিদ্ধান্ত। পৌষমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ক্যাম্পাসের ইতিউতি প্রাচীর তোলা নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে লাগাতার ঝামেলা চলছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। বোলপুরে নির্বাচনী সভা করতে আসা অমিত শাহ, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ নিয়েও বিতর্ক বাধে। বিতর্কের লম্বা তালিকায় নয়া সংযোজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রাখার অভিযোগ।
এ নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছে বিশ্বভারতীর আশ্রমিক, পড়ুয়া, প্রাক্তনী থেকে শিক্ষামহলের একটা বড় অংশও। তাঁদের অভিযোগ উপাচার্যের মদতেই বিশ্বভারতীর উপর রাজনীতির কালো ছায়া নেমে এসেছে। তার জেরে বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য নষ্ট হচ্ছে। রবীন্দ্র আদর্শ থেকে ক্রমশ সরে যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি ও ঐতিহ্য বহনকারী এই প্রতিষ্ঠান। সেই পরিস্থিতিতেই এ বার বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আক্ষেপ করতে দেখা গেল উপাচার্যকে।