ইএসআই হাসপাতালে ঢোকার মুখে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রবিবার নিজস্ব চিত্র।
তাঁর কোনও টাকা নেই, হাসপাতালে প্রবেশের পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনই দাবি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। রবিবার সকালে জোকার ইএসই হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় পার্থকে। তখনই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, টাকা কার? জবাবে পার্থ বলেন, ‘‘আমার কোনও টাকা নেই।’’
গত কয়েক দিনে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে ইডি যে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য-রাজনীতি সরগরম। সেই টাকার দায়ই কি সম্পূর্ণ ভাবে ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন প্রাক্তন মন্ত্রী? যদিও ইডি সূত্রে দাবি, জেরায় পার্থ-‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা দাবি করেছিলেন, তাঁর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া সব টাকাই পার্থের। এমনকি ওই ফ্ল্যাটে পার্থের ঘনিষ্ঠরাই টাকা রেখে যেতেন, তাঁর ঢোকার অধিকারও ছিল না নিজের ফ্ল্যাটে বলেও অর্পিতা ইডির কাছে দাবি করেন। যদিও সেই দাবির সত্যাসত্য আনন্দবাজার অনলাইন বিচার করে দেখেনি।
বস্তুত, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধার হওয়ার পর এই প্রথম মুখ খুললেন পার্থ। এর আগে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রের’ উল্লেখ করলেও টাকা নিয়ে মন্তব্য করেননি। এমনকি তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কোনও টাকা পায়ওনি ইডি। শুক্রবার শুধু পার্থ বলেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করা হচ্ছে। রবিবার হাসপাতালে ঢোকার আগে পার্থকে তাঁর সেই ‘ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল। তারও জবাব দিয়েছেন পার্থ। বলেন, ‘‘সময় এলেই বুঝতে পারবেন। ’’
গত ২৩ জুলাই গ্রেফতার করা হয় পার্থকে। তার পর থেকে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতার একের পর এক ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে কোটি কোটি টাকা, বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়না উদ্ধার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইউি। ঘটনাটির জেরে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে। গত বৃহস্পতিবার পার্থকে তাঁর মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সাসপেন্ড করা হয় দলীয় বিভিন্ন পদ থেকেও। এরপরই শুক্রবার পার্থ জানান, তিনি ‘ষড়যন্ত্রের’ শিকার। স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ঢোকার মুখে এই অভিযোগ করার পর পার্থকে বেরোনোর সময় জিজ্ঞাসা করা হয়, কার ‘ষড়যন্ত্র’? জবাবে পার্থ বলেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত দেখে নিন। যাঁরা ষড়যন্ত্র করছে তাঁরা জানতে পারবেন।’’ রবিবার তাঁকে আবার একই প্রশ্ন করা হলে, প্রাক্তন মন্ত্রী আবার বলেন, ‘‘সময় এলেই জানতে পারবেন।’’
সময়ের কথা অবশ্য শুক্রবারও বলেছিলে পার্থ। তাঁকে যখন প্রশ্ন করা হয়, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত কি ঠিক?’’ তিনি বলেছিলেন, ‘‘সময় বলবে।’’