এসএসসির পাশাপাশি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নিশানায় পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
‘‘নড়ে ঘাস খায় না! দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘাস খায়।’’ শুক্রবার এসএসসির গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় এই ভাষাতেই পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে দুষলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই নিয়োগ দুর্নীতির ফল খেয়েছে এসএসসি এবং শিক্ষা দফতরের কয়েক জন আধিকারিক।’’
শুক্রবার দুপুরে সুপারিশপত্র ছাড়াই গ্রুপ সি পদে নিয়োগ পাওয়া ৫৭ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করার জন্য এসএসসি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এসএসসি কর্তৃপক্ষ তালিকা পেশের পরে ওই ৫৭ জনের নিয়োগ বাতিলের জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি গ্রুপ সি পদে ৭৮৫ জনের চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল করতে বলেন এসএসসি কর্তৃপক্ষকে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, আজ থেকেই স্কুলে ঢুকতে পারবেন না এই গ্রুপ সি কর্মীরা। শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করে চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল করতে হবে এসএসসিকে। স্কুলের কোনও কাজের সঙ্গে তাঁরা যুক্ত থাকতে পারবেন না। তবে এখনই ওই কর্মীদের বেতন ফেরতের কোনও নির্দেশ দেননি তিনি। বিষয়টি আদালত পরে বিবেচনা করবে। পাশাপাশি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, শূন্যপদে ১০ দিনের মধ্যে ওয়েটিং লিস্ট থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
এর পরেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী বলেন, ‘‘এসএসসি যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে নাম এবং স্কুলের নাম দিয়েছে। জেলার নাম প্রকাশ করেনি। এই অবস্থায় আমাদের খুঁজতে সমস্যা হচ্ছে।’’ জবাবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপনারা তো কোনও কাজের নন! জেলার নাম খুঁজে পেতেও সমস্যা!’’এর পর এসএসসির আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন— ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বলছে, আপনারা জেলার নাম দেননি। সন্ধ্যার মধ্যে ওটা কি দেওয়া সম্ভব হবে।’’ জবাবে এসএসসির আইনজীবী বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি।’’
তার পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অবস্থা কেমন জানেন? যারা নড়ে ঘাস খায় না! দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘাস খায়।’’ সেই সঙ্গে এসএসসির আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আপনারা এত অদক্ষ যে কিছু বলার নেই। আপনাদের আমি বিশ্বাস করি না। তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। জানেন এত দিন ধরে কত চাকরিপ্রার্থীর চোখের জল রাস্তার ধুলোয় মিশেছে?’’