মধ্যশিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) দাবি করেন, হাই কোর্টের তলবের কোনও নির্দেশ তাঁর হাতে আসেনি। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
তাঁকে বৃহস্পতিবার তলবই করেনি কলকাতা হাই কোর্ট। তলবের কোনও নির্দেশ তাঁর হাতে আসেনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই দাবি করলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, এ সবই ‘অপপ্রচার’। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর দিন এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ায় তাঁর কাজে সমস্যা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রামানুজ।
হাই কোর্ট সূত্রে যদিও জানা গিয়েছে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি অমৃতা সিংহ একটি মামলায় শর্তসাপেক্ষে রামানুজকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, মামলাকারীকে আদালতের নির্দেশে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিয়োগপত্র না দিলে ২৩ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রামানুজকে সশরীরে আদালতে হাজিরা দিতে হবে। যদিও পর্ষদ সভাপতির দাবি অন্য। তিনি বলেন, ‘‘দুপুর থেকে সংবাদমাধ্যমের একাংশের খবরের জেরে একটা বিভ্রান্তি ছড়ায়। প্রচুর শুভাকাঙ্ক্ষী ফোন করে জানতে চেয়েছেন। তাতে আমি বিব্রত হয়েছি। আমার কাজ বিঘ্নিত হয়েছে। বলা হয়েছে, আমাকে ন্যায়ালয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’’ এর পরেই হাই কোর্টে তলবের কথা অস্বীকার করেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘আমি পরিষ্কার বলতে চাই, এ রকম কোনও নির্দেশ আমার হাতে আসেনি। কোনও নির্দেশ মহামান্য আদালত দেয়নি।’’
বৃহস্পতিবার রাজ্যে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। রামানুজ বলেন, ‘‘আমার আজ যাওয়ার কোনও প্রশ্ন ছিল না। কোনও অবকাশও ছিল না। এ ধরনের খবরে, এ ধরনের বিভ্রান্তিতে আমার অসুবিধা হয়েছে ব্যক্তিগত ভাবে। অন্য দিন হয়তো বিষয়টি নিয়ে সমস্যায় পড়তাম না। যে হেতু মাধ্যমিক চলছে, আজ প্রথম দিন ছিল, আমার কাছে বিষয়টি সমস্যার মনে হয়েছে। এ রকম খবরে অনেকে উদ্বিগ্ন হন, কাজে বিঘ্ন ঘটে।’’ এর পরেই তিনি আরও জোর দিয়ে জানিয়ে দেন যে, আদতে কোনও তলবই আসেনি। রামানুজ বলেন, ‘‘এ রকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি। কোনও নির্দেশ আসেইনি। অপপ্রচার। যেটা সমাজমাধ্যমে হচ্ছে, তা কুৎসা।’’
হাই কোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ বছরের একটি পুরনো মামলায় শর্তসাপেক্ষে রামানুজকে বৃহস্পতিবার তলব করেছিল আদালত। অঞ্জনকুমার খাটুয়া নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, গত ১২ বছর ধরে তাঁকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। গত মাসে হাই কোর্ট তাঁকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এর পর স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) অঞ্জনের চাকরির সুপারিশপত্র পাঠায় পর্ষদকে। অঞ্জনের অভিযোগ, তার পরেও তাঁকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। সেই নিয়োগপত্র পর্ষদের দফতরে আনতে গিয়ে তিনি হেনস্থার শিকার হয়েছেন। যদিও পর্ষদ দাবি করেছিল, সেই নিয়োগপত্র তৈরি রয়েছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি সিংহ নির্দেশ দিয়েছিলেন, ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অঞ্জনকে নিয়োগপত্র না দিলে ২৩ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পর্ষদ সভাপতি রামানুজকে সশরীরে আদালতে হাজিরা দিতে হবে। যদিও বৃহস্পতিবার পর্ষদ সভাপতি আদালতে হাজিরা দেননি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কৌঁসুলি বৃহস্পতিবার আদালতকে জানান, রামানুজ ব্যস্ত রয়েছেন। তার পরেই আদালতের নির্দেশ কার্যকর হয়ে গিয়েছে। এজলাস কক্ষে নিয়োগপত্র হাতে পান অঞ্জন।