মৃতদেহ বহনের জিনিস কিনতে সব থানাকে নির্দেশ দিল রাজ্য পুলিশ। ফাইল চিত্র।
মৃতদেহ বহনে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য রাজ্যের সমস্ত থানা এবং পুলিশের সব মহলকে নির্দেশ দেওয়া হল পুলিশের তরফে। বুধবার রাজ্য পুলিশের আইজির তরফে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে মৃতদেহ বহনের জন্য জরুরি সামগ্রী সত্বর কিনতে হবে। এর জন্য ইতিমধ্যেই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। এর কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, মৃতদেহকে সঠিক ভাবে উদ্ধার না করা হলে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হতে পারে।
আপাত ভাবে এটি পুলিশের রুটিন কাজ বলে মনে করা হলেও কালিয়াগঞ্জের ঘটনার পর এই বিজ্ঞপ্তি এবং তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করার নির্দেশকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কালিয়াগঞ্জে মৃতদেহ উদ্ধারে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা মহলেই প্রশ্ন উঠেছিল। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল, মৃতদেহকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরেই পুলিশের অমানবিকতা নিয়ে সরব হয় রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। পুলিশমহল থেকেও এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
ঘটনাচক্রে বুধবারই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে ‘ভুল’ স্বীকার করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কালিয়াগঞ্জে নিহত ছাত্রীর দেহ রাস্তা দিয়ে টেনে নিয়ে গিয়ে ঠিক করেনি পুলিশ। মমতা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীও বটে। মমতা বলেন, ‘‘এই জায়গাটায় একটা ভুল হয়েছে আমাদের। ও ভাবে নিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি।’’ তবে একই সঙ্গে পুলিশের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে মমতা জানিয়েছেন, পুলিশকে লক্ষ্য করে সে দিন যে ভাবে পাথর ছোড়া হচ্ছিল, তাতে এ ছাড়া আর কোনও উপায়ও ছিল না ওঁদের।
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থানার গঙ্গোয়ার পালইবাড়ি এলাকায় শুক্রবার সকালে এক কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পর অভিযোগ ওঠে, ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুন করেছেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক যুবক ও তাঁর ৪-৫ জন সঙ্গী। অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে মৃতার দেহ নিয়ে রাজ্য সড়কে অবরোধ, বিক্ষোভ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করা ছাড়াও কাঁদানে গ্যাস ছড়িয়েছে পুলিশ। অন্য দিকে, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। অবরোধকারীরা দাবি করেছিলেন, কিশোরীর দেহ পরিবারের কাউকে না দিয়ে প্রমাণ লোপাটের জন্য জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় পুলিশ। সে দিনের ঘটনার পর এখনও উত্তপ্ত কালিয়াগঞ্জ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেখানে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (উত্তরবঙ্গ)অজয় কুমার। ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন এডিজি (সিআইএফ) জ্ঞানবন্ত সিংহ।