দীর্ঘ ১৪ বছর পরে অবশেষে মুক্তির স্বাদ পেলেন ইরানীয় পরিচালক জাফর পানাহি। ছবি: সংগৃহীত।
দীর্ঘ ১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান। অবশেষে মুক্তির স্বাদ পেলেন ইরানীয় পরিচালক জাফর পানাহি। খবর, স্ত্রীর সঙ্গে ইরানের বাইরে সদ্য পা রেখেছেন পরিচালক। যদিও নিজের গন্তব্য সম্পর্কে কোন তথ্য প্রকাশ করেননি তিনি। তবে, সমাজমাধ্যমের পাতায় ছড়িয়ে পড়েছে একটি ছবি। বিমানবন্দরে ব্যাগ ঠেলে নিয়ে যাওয়ার সেই ছবি দেখে ধারণা, সস্ত্রীক ফ্রান্সে বেড়াতে গিয়েছেন পানাহি।
২০০৯ থেকে ২০২৩। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে ইরানের বাইরে পা রাখা নিয়ে জাফর পানাহির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সে দেশের সরকার। শুধু তাই নয়, সে দেশের সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রচার করার অভিযোগে কারাবাসও হয়েছে তাঁর। ২০১০ সালে ইরানের সুপ্রিম কোর্ট পানাহিকে ছ’বছরের কারাদণ্ড দেয়। গত বছর জুলাই মাসে গ্রেফতার হন পরিচালক। যদিও ছয় বছরের কারাদণ্ডের মেয়াদ এসে ঠেকেছিল সাত মাসে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই মুক্তি পান পানাহি। সাত মাস ধরে কুখ্যাত এভিন কারাগারে আটকে রাখার প্রতিবাদে অনশন শুরু করেছিলেন পানাহি। আমেরিকার ‘সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ইরান’-এর তরফে জানানো হয়, অনশন শুরু করার দু’দিনের মাথায় জামিন দেওয়া হয় পানাহিকে।
২০২২ সালের জুলাই থেকে শুরু করে দীর্ঘ সাত মাস ধরে তেহরানের এভিন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল ৬২ বছরের বিশ্বখ্যাত এই পরিচালককে। কারাগারের ভিতর থেকেই এক বিবৃতিতে পানাহি জানিয়েছিলেন, বিচারব্যবস্থা ও নিরাপত্তাবাহিনীর ‘বেআইনি এবং অমানবিক’ আচরণ আর ‘পণবন্দি করে রাখার’ প্রতিবাদে তিনি খাবার ও ওষুধ খাওয়া বন্ধ করছেন। পানাহির কথায়, ‘‘হয়তো আমার প্রাণহীন দেহই কারাগার থেকে মুক্ত হবে, কিন্তু আমার এই সিদ্ধান্তের কোনও নড়চড় হবে না।’’ কারাগার থেকে লেখা পরিচালকের এই বিবৃতিটি সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করেন তাঁর স্ত্রী তাহিরা সইদি এবং ছেলে পানা পানাহি।
গ্রেফতার হওয়া আরেক ইরানীয় পরিচালক মহম্মদ রাসুলফের বিষয়ে খোঁজ নিতে গত বছরের জুলাই মাসে এভিন কারাগারে গিয়েছিলেন পানাহি। একটি পুরনো মামলার দোহাই দিয়ে সেখানেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। অক্টোবরে তাঁকে মুক্তি দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু তার পরেও কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছিল পরিচালককে। ৭ জানুয়ারি জামিনে মুক্তি পান রাসুলফ। ৩ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পান পানাহি।