গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতার না করার জন্য কলকাতা হাই কোর্টের এক বিচারপতির বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাকে চ্যালেঞ্জ জানাল রাজ্য সরকার। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত আবেদন জানানো হয়েছে। হাই কোর্ট সূত্রের খবর, বুধবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে ওই আবেদনের শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত শুভেন্দুকে কোনও অবস্থাতেই গ্রেফতার করতে পারবে না পুলিশ। এমনকি, রাজ্যে বিধানসভার বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনও এফআইআর হলেও তাঁকে আদালতের অনুমতি ছাড়া গ্রেফতার করা যাবে না বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি মান্থা। ছ’সপ্তাহ পরে ফের ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই ডিভিশন বেঞ্চে বিচারপতি মান্থার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানাল রাজ্য।
শুভেন্দু তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা-সহ রাজ্যের পাঁচটি থানায় দায়ের হওয়া পাঁচটি মামলা প্রসঙ্গে হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, হয় মামলাগুলি খারিজ করা হয় অথবা সিবিআই তদন্ত হোক। শুভেন্দুর যুক্তি, প্রতিটি মামলাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং তাঁর রাজ্য পুলিশের উপর কোনও ভরসা নেই। বিচারপতি মান্থা নির্দেশ দেন, শুভেন্দুকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তাই তাঁর মর্যাদার কথা বিবেচনা করেই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নির্ধারিত করতে হবে। সিআইডি বা পুলিশ হঠাৎ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলেই তাঁর পক্ষ হাজির হওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে।
কাঁথি, নন্দীগ্রাম এবং পাঁশকুড়া থানায় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলির শুনানির উপর স্থগিতাদেশও জারি করেছে হাই কোর্ট। কাঁথি থানায় দায়ের হওয়া দেহরক্ষীর রহস্যমৃত্যুর মামলা এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালে তৎকালীন তৃণমূলের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দেহরক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তী গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল। সেই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার ভবানীভবনে শুভেন্দুকে তলব করেছিল সিআইডি। কিন্তু তিনি হাজির হননি।
তবে তমলুকে দায়ের হওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এবং কলকাতার মানিকতলা থানায় দায়ের হওয়া চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগের মামলা দু’টির শুনানি চলতে পারে বলে জানিয়েছিলেন বিচারপতি মান্থা।