পুনর্নির্বাচনের দিন গ্রামবাসীদের ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে মাইকে পুলিশের প্রচার। কাঁথি-৩ ব্লকের আমতলিয়ার একটি বুথে। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটের দিন ছাপ্পা হয়েছিল, এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছিল বহিরাগত দুষ্কৃতীরা। সে ভাবে প্রতিরোধ গড়তে পারেননি গ্রামবাসী। তবে পুনর্নির্বাচনের দিন তাঁরা প্রতিবাদ করলেন। দুষ্কৃতীরা কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় সোমবার ভোটই দিলেন না কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের আমতলিয়া গ্রামের একটি বুথের ভোটাররা।
গত ৮ জুলাই, পঞ্চায়েত ভোটের দিন আমতলিয়া ৫৫ নম্বর বুথে গোলমাল বেধেছিল। বহিরাগত বাইকবাহিনী বুথে ঢুকে ছাপ্পা দেয় বলে অভিযোগ। এক বহিরাগতকে গ্রামবাসী ধরেও ফেলেন। তার জেরেই দুষ্কৃতীরা পাল্টা হামলা চালায় গ্রামে। বাড়ি, মোটরবাইক, গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। কয়েক জনকে মারধরের অভিযোগও ওঠে। ঘটনায় নাম জড়ায় ব্লক তৃণমূল নেতা আনসারি দফতরির।
সোমবার, রাজ্যের ৬৯৬টি বুথের মধ্যে আমতলিয়ার এই বুথে পুনর্নির্বাচনের কথা ছিল। ভোটকর্মীরা সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে হাজিরও ছিলেন। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর, তার পর বিকেলেও ওই বুথের ৯২৩ জন ভোটারের কেউই বুথমুখো যাননি। বারবার প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তবে কেউ সাড়া দেননি। পুনর্নির্বাচন শেষে বিডিও তথা ব্লক রিটার্নিং অফিসার শুভজিৎ জানা মানছেন, ‘‘আমতলিয়ার একটি বুথে এ দিন এক জনও ভোট দিতে আসেননি।’’ শেষে সন্ধে ৬টার পরে ভোটকর্মীরা সব গুটিয়ে বুথ ছেড়ে ফিরে যান। তাঁদের অভিজ্ঞতা, রাস্তা খারাপ বা পানীয় জলের দাবিতে ভোট বয়কট হয় বটে। তবে ভোট হিংসার প্রতিবাদে বয়কট, এমনটা দেখা যায় না।
আমতলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০টি আসনের মধ্যে ৩টি তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে। তবে ভোট না দিয়ে গ্রামবাসীদের প্রতিবাদকে সমর্থন করছে সব দলই। ওই বুথের বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী হাজরা বলছেন, ‘‘বহিরাগতরা সে দিন গ্রামে ঢুকে হামলা চালায়। তাই গ্রামবাসী ঠিক করেন, কেউ ভোট দেবে না। লিখিতভাবে প্রশাসনকে তা জানানোও হয়।’’ তৃণমূল প্রার্থী অর্জুন গিরিরও বক্তব্য, ‘‘আমরা শান্তিতে বাঁচতে চাই। দুষ্কৃতীদের শাস্তি চাই।’’ গোলমালের ঘটনা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।