সমাবর্তনে মমতাকে আমন্ত্রণ বিশ্বভারতীর।
বিশ্বভারতীর শতবর্ষ অনুষ্ঠান ঘিরে রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাত দেখা দিয়েছিল। সেই তিক্ততা ঝেড়ে ফেলে এ বার সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানাল বিশ্বভারতী। রবিবার মমতার উদ্দেশে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে নবান্নের তরফে এখনও পর্যন্ত তার প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়নি।
এর আগে ডিসেম্বর মাসে শতবর্ষ অনুষ্ঠান ঘিরে রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাত দেখা দেয় বিশ্বভারতীর। ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাতে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ওই অনুষ্ঠানে মমতার অনুপস্থিতি নজর কাড়ে সকলের। সেই সময় বিজেপি দাবি করে, আমন্ত্রণ পেয়েও বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহ্যের অপমান করেছেন মমতা।
এমনকি ৪ ডিসেম্বর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর লেখা একটি চিঠির প্রতিলিপিও প্রকাশ করে বিজেপি। তাতে যদিও চিঠির প্রাপ্তিস্বীকারের নথির কোনও উল্লেখ ছিল না।
তৃণমূল পাল্টা অভিযোগ করে, বিশ্বভারতীর তরফে মমতাকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। উপাচার্যের লেখা চিঠির প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু প্রশ্ন তোলেন, ‘‘উপাচার্য নিজেই সই করে নিজের কাছে ওই চিঠি রেখে দিয়েছিলেন নাকি?’’
কোনও রকম আমন্ত্রণপত্র পাননি বলে পরে মমতা নিজেও মুখ খোলেন। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘কে ডাকল? কখন ডাকল? আমি কোনও আমন্ত্রণ পাইনি। না পেয়েছি চিঠি, না পেয়েছি ফোন।’’
তার পর থেকে যত দিন এগিয়েছে, নানা ঘটনায় রাজ্যের সঙ্গে বিশ্বভারতীর সম্পর্কের অবনতি হয়েছে বই উন্নতি হয়নি। অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের জমি দখল করে রাখার অভিযোগ উঠলে বিশ্বভারতীর তীব্র নিন্দা করেন মমতা। এমনকি পূর্ত দফতর থেকে দেওয়া একটি রাস্তাও বিশ্বভারতীর কাছ থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক তরজায় বিশ্বভারতীর নাম জুড়ে যাওয়াটা সেই সময় অনেকেই ভাল ভাবে নেননি। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারেননি বলে আক্ষেপও করতে দেখা যায় উপাচার্যকে। তাই বিতর্ক এড়াতেই কি মমতাকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হল? বিভিন্ন মহল থেকে উঠছে প্রশ্ন। ওই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত থাকার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্কেরও অনুষ্ঠানে হাজির থাকার কথা।