ভিজে মাটির উপর অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ।
লালগড়ের পর এ বার বাঘের আতঙ্ক ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায়। শুক্রবার সকালে রামগড় এলাকার বাসিন্দারা ভিজে মাটির উপর কোনও জন্তুর পায়ের ছাপ দেখতে পান। গ্রামবাসীদের দাবি, ওই পায়ের ছাপ বাঘের। গ্রামের বেশ কয়েক জন বাসিন্দা দাবি করেন,তাঁরা বৃহস্পতিবার রাতভর পাশের জঙ্গলে বাঘের চাপা গর্জনও শুনেছেন। পায়ের ছাপ আর গর্জনের কথা চাউর হতেই আতঙ্ক ছড়ায় গোটা এলাকায়, কারণ গত বছরে লালগড়ের জঙ্গলে খাঁটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতি এখনও টাটকা এলাকার মানুষের মনে।
গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বন বিভাগের কর্তারা। রেঞ্জার থেকে শুরু করে বন বিভাগের অন্য কর্তারা পায়ের ছাপ দেখেন। তাঁরা যদিও পায়ের ছাপগুলো বাঘের নয় বলেই দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, পায়ের ছাপগুলো নেকড়ে বা হায়েনার মতো কোনও বন্যজন্তুর পায়ের ছাপ। তবে তা কখনওই বাঘ নয়।
গ্রামের যে অংশে ওই বন্য জন্তুর পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে সেই এলাকাটি জঙ্গল লাগোয়া। ধামকুড়া এবং আধারনয়ন রেঞ্জের ওই জঙ্গল বর্ষাকালে যথেষ্ট ঘন। গ্রামবাসীদের দাবি ওই জঙ্গলেই রয়েছে ওই বন্য প্রাণী। এ দিন সকাল থেকেই আতঙ্কের জেরে জঙ্গলে গবাদি পশু চরাতে নিয়ে যাননি গ্রামের লোকজন।
আরও পড়ুন, ‘জয় শ্রীরাম’ না-বলায় এ বার মার পুরুলিয়ায়
গত বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদই প্রথম বাঘের আতঙ্ক ছড়ায় লালগড়, রামগড় এলাকায়। জঙ্গল থেকে গরু চরিয়ে ফেরার পথে বা জঙ্গলের রাস্তায় ফেরার সময় আহতও হন কয়েকজন। প্রথম থেকেই গ্রামবাসীরা দাবি করেছিলেন তাঁরা বাঘ দেখেছেন। তবে প্রথম দিকে বন দফতর বাঘ বলে আদৌ মানতে চায়নি। পরে ট্র্যাপ ক্যামেরায় বাঘের ছবি ধরা পড়ার পর বন দফতর মেনে নেয়।
বন বিভাগের অন্য কর্তাদের দাবি, পায়ের ছাপগুলো নেকড়ে বা হায়েনার মতো কোনও বন্যজন্তুর।
সে কারণে এ বারও বন দফতরের কথায় খুব বেশি আশ্বস্ত হতে পারেননি গ্রামের মানুষ। তবে ওই বন্যজন্তুর পায়ের ছাপের ছবি দেখে রাজ্য বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ বোর্ডের অন্যতম সদস্য জয়দীপ কুণ্ডুও দাবি করেন, ‘‘ওই ছবি দেখে মনে হচ্ছে এই পায়ের ছাপ বাঘের নয়। কারণ পায়ের ছাপের সামনের দিকে নখের দাগ রয়েছে। তা থেকে মনে হয় নেকড়ে বা হায়েনার মত কোনও প্রাণী। কারণ বাঘের পায়ের ছাপে নখের দাগ পড়ে না।”
আরও পড়ুন, ৭ বছর জেল খেটে বেকসুর, নেপথ্যে জেলখাটা কৌঁসুলি
তবে বন দফতর সূত্রে খবর, বনকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আশে পাশের জঙ্গলে নজর রাখতে। গ্রামবাসীদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
(দুই বর্ধমান, দুর্গাপুর, আসানসোল, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া সহ দক্ষিণবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর, 'বাংলার' খবর পড়ুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)