প্রতীকী ছবি।
স্থানীয় ক্লাবের উদ্যোগে হবে করোনার টিকাকরণ শিবির। দেওয়া হবে কোভিশিল্ড।
এমনই প্রচার চলছিল হোয়াটসঅ্যাপে। ৯৮০ টাকা জমা দিয়ে নাম নথিভুক্তও করেছিলেন অনেকে। তবে কলকাতায় ভুয়ো টিকাকরণ শিবিরের কথা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ল। জানা গেল, রেলশহর খড়্গপুরে হতে চলা ওই টিকাকরণ শিবির সম্পর্কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে স্বাস্থ্য দফতর।
আগামী ৩ জুলাই খড়্গপুর শহরের মালঞ্চর ‘যুবসঙ্ঘ ক্লাব’ প্রাঙ্গণে টিকাকরণ শিবির অনুষ্ঠিত হতে চলেছে— এই মেসেজ গত কয়েক দিন ধরেই স্থানীয় সকলের হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরছিল। শিবিরের আয়োজক হিসেবে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের নামও ছিল। বহু মানুষ সঙ্গের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে, তাঁদের ওল্ড মালঞ্চর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে বলা হয়। সেখানেই দিন তিনেক ধরে প্রায় শতাধিক নাম নথিভুক্ত হয়েছে বলে খবর। কোভিশিল্ডের প্রতি ডোজ়ের সরকার নির্ধারিত মূল্য ৭৮০ টাকা। ২০০ টাকা ‘সার্ভিস চার্জ’ যোগ করে ৯৮০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছিল। কসবার ভুয়ো টিকাকরণ শিবিরের পর্দা ফাঁসের পর সন্দেহ জাগে খড়্গপুরবাসীর। খোঁজ নিয়ে জানা যায় স্বাস্থ্য দফতর এ সব কিছুই জানে না। রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী মানছেন, “কোনও টিকাকরণ শিবিরের অনুমতি দেওয়া হয়নি।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সুদীপ সরকার বলেন, “অনুমতি ছাড়া টিকাকরণ শিবিরের নামে প্রচার ও টাকা তোলা বেআইনি। আমরা ওঁদের শো-কজ় করছি।”
ওই ক্লাবের সম্পাদক জয়দেব মণ্ডল জানালেন, ওল্ড মালঞ্চর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার শিবিরের আয়োজন করছে। বিষয়টি বিশদে জানতে টিকা নিতে আগ্রহী সেজেই ফোন করা হয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে থাকা মোবাইল নম্বরে। টুম্পা হাতুই নামে এক মহিলা ফোন ধরে বললেন, “আমাদের ডায়গস্টিক সেন্টারের মাধ্যমে আগামী ৩ জুলাই যুবসঙ্ঘ ক্লাবে ওই শিবির হবে। আগাম ৯৮০ টাকা দিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে হবে।” তবে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিনিধি পরিচয় পেতেই তাঁর জবাব, “আপনি আমাদের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।”
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মধুমন্তী রায়ের দাবি, “শিবিরের আগে স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি নিশ্চয়ই নেব।” কিন্তু অনুমতি ছাড়াই প্রচার চালিয়ে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন কেন? মধুমন্তীর যুক্তি, “শিবিরের জন্য ক্লাব প্রাঙ্গণ ভাড়া ছাড়াও নানা খরচ থাকায় অতিরিক্ত দু’শো টাকা নিচ্ছি। তবে অনুমতি ছাড়া প্রচার চালানো বা টাকা নেওয়া ভুল হয়েছে।” এর সঙ্গে কলকাতার যে বেসরকারি হাসপাতাল যুক্ত, তার জেনারেল ম্যানেজার অনিন্দ্য সেন মজুমদারও মানছেন, “অনুমতির আগে প্রচার বা টাকা জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি। স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি পেলে তবেই শিবির হবে। আর আমরা টাকা ফেরত দিতে বলেছি।”