বিজেপি কর্মী শুভদীপ মিশ্র। —ফাইল চিত্র।
বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটিতে বিজেপিকর্মী শুভদীপ মিশ্রের মৃত্যু নিয়ে বুধবার বাড়ির লোক আঙুল তুলেছিলেন অন্য একটি পরিবারের দিকে। বৃহস্পতিবার শুভদীপের বাবার সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি ফের দাবি করেন, এই খুনে তৃণমূলই জড়িত। মৃতের পরিবারকে নিয়ে সিবিআই তদন্ত চেয়ে তাঁরা মামলা করবেন বলেও জানান শুভেন্দু। মৃতের পরিবার সরাসরি তৃণমূলের দিকে আঙুল না তুললেও এ দিন দাবি করেছে, পুলিশের তদন্তে তাদের ভরসা নেই। তাঁরাও সিবিআই তদন্ত চান।
গঙ্গাজলঘাটির নিধিরামপুরের বাসিন্দা শুভদীপের হাত বাঁধা, গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বুধবার। পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন শুভদীপ। তাঁকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা খুন করেছে বলে সে দিনই নিজের এক্স হ্যান্ডলে অভিযোগ করে সিবিআই তদন্ত দাবি করেন শুভেন্দু। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া জেলারই বিষ্ণুপুরে দলীয় কর্মসূচিতে এসে মৃতের বাবা নন্দলাল মিশ্র ও দিদি দোলন তিওয়ারিকে পাশে বসিয়ে শুভেন্দু ফের দাবি করেন, “আমাদের শক্তিকেন্দ্রের প্রমুখকে খুনে তৃণমূলের লোকেরা যুক্ত আছে বলে পুলিশ গ্রেফতার করবে না। দু’টো হাত বেঁধে কেউ ঝুলতে পারে না। ১৬ তারিখে আদালত খুললে ওদের পরিবারকে নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাব।’’ তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্রের পাল্টা দাবি, “সামনে লোকসভা ভোট থাকায়, জোর করে রাজনৈতিক রং লাগাতে চাইছে বিজেপি।” শুভদীপের বাবা কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। রাজনৈতিক কারণে এই খুন কি না, সে প্রশ্ন এড়িয়ে মৃতের দিদি দোলন বলেন, “ভাইয়ের খুনিদের শাস্তি চাই। পুলিশি তদন্তে ভরসা নেই। আমরাও সিবিআই তদন্ত চাই।”
ঘটনার যথাযথ তদন্ত চলছে বলে জানান বাঁকুড়ার জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে শুভদীপের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘জীবনে চলার পথে হার মানার’-র বার্তা পোস্ট হওয়ার পরের দিন তাঁর দেহ মেলে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, এক বধূর পরিবার শুভদীপকে খুনের হুমকি দিয়েছিল। তার ভিত্তিতে পুলিশ বধূ, তাঁর স্বামী ও দেওরকে গ্রেফতার করেছে। এ দিন বাঁকুড়া আদালত ধৃতদের তিন দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। পুলিশ সুপার বলেন, “ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’
এ দিন সকালে শুভদীপের বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা-মাকে সান্ত্বনা জানান কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার। সঙ্গে ছিলেন শালতোড়া ও ছাতনার বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি ও সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায়।