সম্প্রতি ইউনেস্কোর আবহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় কলকাতার দুর্গাপুজো জায়গা পেয়েছে ফাইল চিত্র
সম্প্রতি ইউনেস্কোর আবহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় কলকাতার দুর্গাপুজো জায়গা পেয়েছে । সেই উপলক্ষে আগামী ২২ ডিসেম্বর কলকাতায় এক পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। তাতে অংশ নেবেন শহরের সমস্ত পুজো কমিটির কর্মকর্তা থেকে সেই সব পুজোয় কাজ করা শিল্পীরা। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় এই স্বীকৃতি মেলার পর দুর্গোৎসব অন্য আঙ্গিকে পৌঁছবে বলেই দাবি করছেন শহরের পুজো উদ্যোক্তারা। এই পদযাত্রার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে, ‘গর্বের বার্তা... হোক পদযাত্রা’।
বুধবার দুপুর দুটোয় অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে থেকে এই পদযাত্রা শুরু হবে। শেষ হবে ধর্মতলার কাছে ডোরিনা ক্রসিংয়ে এসে।পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি এই পদযাত্রায় অংশ নেবেন কলকাতারা পুজোকে অন্যমাত্রায় নিয়ে যাওয়া শিল্পীরা — ভবতোষ সুতার, সনাতন দিন্দা, সুশান্ত পাল, রিন্টু দাস, বিশ্বনাথ দে প্রমুখ। পদযাত্রা প্রসঙ্গে শিল্পী ভবতোষবলেন, ‘‘বাঙালি তো সারা বছর নানা কারণেই মিছিলে হাঁটে। এ বার না হয় দুর্গাপুজোর স্বীকৃতির জন্য আমাদের সঙ্গে হাঁটবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমরা শিল্পীরাই তো প্রথমে এই ধরনের মিছিলের কথা বলেছিলাম। তবে পদযাত্রা যখন হচ্ছে আমরা সবাই সেই মিছিলে হাঁটব।’’
কলকাতার অন্যতম দুর্গাপুজো কমিটি ত্রিধারা সম্মেলনীর কর্মকর্তা তথা রাসবিহারীর বিধায়ক দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘দুর্গাপুজোর এমন স্বীকৃতিতে আমরা গর্বিত। কিন্তু আমরা যারা বারোয়ারি পুজোর সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের জন্য এই স্বীকৃতি আরও বেশি আনন্দের। উদ্যোক্তারা প্রতি বছর কত্ত পরিশ্রম করে পুজোর আয়োজন করে। মানুষ দেখে প্রশংসা করেন। এ বার তা বিশ্বমঞ্চেও সমাদৃত হবে। এটা ভেবেই ভাল লাগছে।’’
জানা গিয়েছে, ওই মিছিলে যোগ দেবে এমন প্রথম সারির কয়েকটি পুজো কমিটি ইতিমধ্যেই শোভাযাত্রা শুরু করে দিয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার এক পুজো কমিটির কর্তা জানিয়েছেন, সে দিন ঢাক-ঢোলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে, মনে হবে যেন বড়দিনেরই আগে শীতেই শহরে পুজো চলে এসেছে।
গত ১৩-১৮ ডিসেম্বর প্যারিসে বসেছিল ইউনেস্কোর অধিবেশন। সেখানেই কলকাতার দুর্গাপুজোকে ওই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে কলকাতার শারদোৎসবের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের মাধ্যমে আবেদন গিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিভাগে। সেই আবেদনের মূল্যায়ন করেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। সেই বিচারেই ‘হেরিটেজ’তকমা পায় বাংলার এই উৎসব। দুর্গাপুজোর এই স্বীকৃতি পাওয়ার পর টুইট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।