কলকাতার সদর স্ট্রিটের সেই হোটেল। —নিজস্ব চিত্র।
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমকে ‘খুনের’ ঘটনায় যাঁরা অভিযুক্ত, ঘটনার অনেক দিন আগেই কলকাতায় চলে এসেছিলেন তাঁরা। শহরে বসেই কষেছিলেন ‘খুনের’ ছক। তেমনটাই জানা যাচ্ছে সিআইডি সূত্রে। পশ্চিমবঙ্গে এই ঘটনার তদন্ত করছে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
গত ১২ মে ভারতে এসেছিলেন আজিম। চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। সিআইডি সূত্রে খবর, তার অন্তত ১০ দিন আগেই কলকাতায় চলে এসেছিলেন অভিযুক্তেরা। ছিলেন ধর্মতলার কাছে সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলে। ওই হোটেলের নথি অনুযায়ী, ২ মে থেকে সেখানে থাকছিলেন ফয়জ়ল এবং মুস্তাফিজুর নামে দুই ব্যক্তি। পরে আজিম ‘খুনের’ ঘটনায় যাঁদের গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। ওই দু’জনই হোটেল ছেড়েছিলেন ১৩ মে, আজিম কলকাতায় আসার এক দিন পর।
সদর স্ট্রিটের ওই হোটেলে বাংলাদেশ থেকে এসে অনেকই থাকেন। বাংলাদেশিদের আনাগোনা লেগেই থাকে শহরের ওই এলাকায়। হোটেলের এক মহিলা কর্মী জানান, অভিযুক্ত দু’জন সাধারণ বিনা এসির ঘরে ছিলেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে কলকাতায় এসেছেন বলে জানিয়েছিলেন। তাঁরা যে ঘরে থাকছিলেন, তার ভাড়া ছিল দিনে ১২০০ টাকা। তাঁদের আচরণে কখনও কোনও অসঙ্গতি দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন হোটেলের কর্মীরা। ইতিমধ্যে ওই হোটেলে ঢুঁ মেরেছেন তদন্তকারীরা। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে শুরু করে হোটেলের নাম নথিভুক্তিকরণের খাতা, খতিয়ে দেখা হয়েছে সব। হোটেল সূত্রে খবর, সেখান থেকে বেরোনোর সময়ে নগদ টাকায় ভাড়া মিটিয়েছিলেন অভিযুক্তেরা। অনলাইন মাধ্যমে টাকা দেননি কোথাও।
তদন্তকারীদের অনুমান, বাংলাদেশের সংসদ সদস্যকে খুন করার পরিকল্পনা অনেক পুরনো। সেই ছক কষতেই ১০ দিন আগে কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছিলেন ফয়জ়ল এবং মুস্তাফিজুর। কাজ মিটে গেলে হোটেল ছেড়ে দেন। যে হেতু সদর স্ট্রিটে অনেক বাংলাদেশি এসে থাকেন, তাই আলাদা করে তাঁদের আচরণে সন্দেহ দানা বাঁধেনি।
কলকাতায় এসে প্রথমে বরাহনগরের বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন আজিম। সেখান থেকে দু’দিন পর নিখোঁজ হয়ে যান। মনে করা হচ্ছে, নিউ টাউনের অভিজাত একটি আবাসনে তাঁকে ‘খুন’ করা হয়েছে। যদিও, তাঁর দেহ মেলেনি। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন, আজিম খুন হয়েছেন। নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিআইডি এক সন্দেহভাজন যুবককে আটকও করেছে।