মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হবে রাজ্য সরকার। সোমবার নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লিখে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। নিম্ন আদালতের শাস্তি ঘোষণার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মালদহে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিলেন, এখনও দোষীর ফাঁসির দাবিতে তিনি অনড়। এ বার এক্স হ্যান্ডলে আরজি করের ঘটনাকে ‘জঘন্য অপরাধ’ বলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানালেন মমতা।
মমতা এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনাকে আদালত বিরলের মধ্যে বিরলতম বলল না। এটা দেখে আমি স্তম্ভিত। আমি মনে করি, এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা, যাতে ফাঁসির শাস্তিই হওয়া উচিত। কী ভাবে বিচার শেষে একে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে মনে করা হল না? ’’ এর পরেই তিনি এই মামলাকে ‘সংবেদনশীল’ জানিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি তুলেছেন।
সম্প্রতি জয়নগর, ফরাক্কা, গুড়াপে নির্যাতনের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দিয়েছে নিম্ন আদালত। সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতা লিখেছেন, ‘‘গত তিন-চার মাসে এ ধরনের অপরাধে দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করাতে পেরেছি আমরা। তা হলে এই মামলায় কেন সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হল না?’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনাকে ‘জঘন্য অপরাধ’ বলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, হাই কোর্টে দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানানো হবে।
সোমবার দুপুরে শিয়ালদহ আদালত সঞ্জয়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়। সেই শাস্তি ঘোষণার ঠিক পরেই তা নিয়ে আক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাসফরের মাঝেই মালদহে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমাদের হাতে এই মামলা থাকলে, আমরা অনেক আগেই ফাঁসির রায় করিয়ে দিতে পারতাম।’’ এই প্রসঙ্গে তিনি জয়নগর, ফরাক্কা, গুড়াপের ঘটনায় ফাঁসির সাজার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। প্রসঙ্গত, এই তিনটি মামলারই তদন্ত করেছিল রাজ্য পুলিশ। মমতা সেই সাজার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘তিনটি কেসেই আমরা ফাঁসির সাজা করিয়ে দিয়েছি। এটা (আরজি কর মামলা) খুব গম্ভীর বিষয়।’’ এর পরেই সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি জানি না, কী ভাবে লড়াই করেছে, কী যুক্তি দিয়েছে। সবটাই সিবিআই করেছে। আমাদের হাত থেকে মামলাটা ইচ্ছা করে কেড়ে নিয়ে চলে গেল।’’ তিনি জানিয়েছেন, এর পরেও তিনি চেয়েছিলেন, ‘নরপিশাচদের চরমতম শাস্তি হোক’। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি বলেই আক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমি সন্তুষ্ট নই। ফাঁসির সাজা হলে অন্তত মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।’’ এ বার সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতেই তাঁর সরকার হাই কোর্টে যাচ্ছে বলে ঘোষণা করলেন মমতা।