সন্দীপ সেন ও কুণাল ঘোষ।
‘কাটমানি’ মন্তব্যে এ বার মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানার ওসি সন্দীপ সেনের পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। শাসক দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল স্পষ্ট জানান, ওসি যা বলেছেন, তা আদতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সরকারেরই কথা। যে ভাবে কাজ হওয়া উচিত বলে সরকার মনে করে, ওসি সেই কথাই বলেছেন। ঘটনাচক্রে, ওসির মন্তব্য নিয়ে কিছুটা ক্ষোভের সুর শোনা গিয়েছিল বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার মুখে। ‘‘ওসি ওই ধরনের মন্তব্য না করলেই পারতেন,’’— বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন তিনি। তার পরেই সন্দীপের মন্তব্যকে সমর্থন করলেন কুণাল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত সোমবার বড়ঞা থানা এলাকার সাহোড়ায় একটি সর্বজনীন কালীপুজোর অনুষ্ঠানে গিয়ে বক্তৃতা করেছিলেন সন্দীপ। তাঁর সেই ভাষণের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। সেই ভিডিয়োয় ওসি দাবি করেন, কাজের জন্য পুলিশকে কাটমানি দিতে হয়। ঠিকাদারদের কাটমানি দিতে হয় ব্লক দফতরকেও। তাঁর অভিযোগ, সকলকে যদি এ ভাবে টাকাপয়সা দিতে হয়, তা হলে রাস্তার কাজটা ঠিকঠাক করে হবে কী করে? ওই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। ওসি এ নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু তত ক্ষণে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। কাটমানি-নালিশে শাসকদলকে বিঁধতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। স্থানীয় প্রশাসনের একাংশও ওসির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
তার প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার কুণাল বলেন, ‘‘শাসক দল মনে করে, বরাদ্দ হওয়া টাকার ১০০ শতাংশই উন্নয়নের কাজে ব্যবহার হওয়া উচিত। নেত্রী (তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)-ও তা-ই মনে করে। আর সব জায়গায় যে তৃণমূল ক্ষমতায় আছে, তা তো নয়। বরাদ্দ টাকা সার্বিক ভাবেই উন্নয়নের কাজে ব্যবহার হওয়া উচিত। ওসি যা বলেছেন, তা মুখ্যমন্ত্রী এবং সরকারেরই কথা।’’
সন্দীপ অবশ্য নিজের ভাষণে এক বারের জন্যও কোনও প্রাক্তন ওসির নাম করেননি। ভিডিয়োতে তাঁকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘‘থানার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই কাটমানি খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। এবং বর্তমান বিধায়কের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করে দিয়েছি, প্রত্যেক অঞ্চলের কন্ট্রাক্টর সেই অঞ্চলেই কাজ করবে।’’ এ নিয়ে পাল্টা বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ বলেন, ‘‘আমার বিধানসভা এলাকায় কোনও অনৈতিক কাজকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। ওসি এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য না করলেই ভাল করতেন।’’