বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ৮টি বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের নেতারা। ফাইল চিত্র।
‘ভেহিকল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস’ (ভিএলটিডি) বসানো নিয়ে এ বারও পরিবহণ দফতরের বৈঠক কোনও সিদ্ধান্তই হল না। সোমবার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পরিবহণ দফতরের কর্তারা ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন। এই বৈঠকে যেমন হাজির হয়েছিলেন বেসরকারি গণপরিবহণ সংগঠনের প্রধানরা, তেমনই ভিএলটিডি বসানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কর্তারাও। দীর্ঘ এই বৈঠকের পরেও শেষ পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া গেল না। বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ৮টি বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের নেতারা।
মাসখানেক আগে বাণিজ্যিক গাড়িতে ভিএলটিডি বসানোর বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে পরিবহণ দফতর। প্রথমে চলতি বছরের মধ্যেই এই নতুন প্রযুক্তিটি গাড়িতে লাগানোর নির্দেশ দিলেও, সম্প্রতি আরও একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়িতে ১ ডিসেম্বর থেকে ‘ভেহিকল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস’ বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে আগের সিদ্ধান্ত বদল করতে হচ্ছে। নতুন জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১ এপ্রিল থেকে ভিএলটিডি ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। ৩১ মার্চের মধ্যে বেসরকারি গাড়ির মালিকদের এই ডিভাইসটি নিজেদের গাড়িতে বসাতে হবে। নতুন এই সিদ্ধান্তটি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে গাড়ির ‘ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট’ (সিএফ) দেওয়া হবে। সঙ্গে যত দিন না গাড়িতে ভিএলটিডি লাগানো হচ্ছে, তত দিন দৈনিক ৫০ টাকা করে জরিমানা করা হবে। এ নিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন বেসরকারি পরিবহণ মাধ্যমের মালিকরা।
সেই বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেই সোমবার বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু বেসরকারি গণ পরিবহণ সংস্থার প্রধানরা জানিয়ে দেন, ভিএলটিডি লাগানোর উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করতে পারেনি পরিবহণ দফতর। তা ছাড়া একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে বেসরকারি পরিবহণ মালিকদের উপর চাপ তৈরি করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, একসঙ্গে সব গাড়িতে ভিএলটিডি প্রযুক্তি বসাতে গেলে পরিবহণ পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে। তাই গাড়ির সিএফ করার সময়েই এই প্রযুক্তি বসানো হোক। তা হলে বেসরকারি পরিবহণ মালিকরা যেমন ভিএলটিডি প্রযুক্তি গাড়িতে বসানোর সুযোগ পেয়ে যাবেন, তেমনই, পরিবহণ পরিষেবাও স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু বৈঠকে পরিবহণ দফতর জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৩১ মার্চের মধ্যেই সব বেসরকারি পরিবহণে নতুন এই প্রযুক্তি বসাতে হবে। আর অতিরিক্ত সময় দেওয়া যাবে না। আর এমন পরিস্থিতিতে বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব ছিল না বলেই জানিয়েছেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। বৈঠকের বিষয়ে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে বিষয়টি জানানো হবে বলেও জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
বৈঠকে উপস্থিত সিটি সার্বাবান বাস সার্ভিসেসের নেতা টিটো সাহা বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই বেসরকারি পরিবহণ পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। তার উপর সরকার যদি নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে, তা হলে আমাদের পক্ষেও পরিস্থিতি কঠিনতর হয়ে পড়বে। তাই আমরা আমাদের দাবির কথা জানিয়েছি। আশা করব, রাজ্য সরকার সব পরিস্থিতি বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেবে।’’