কমিশন তৈরির কথা আগেই ঘোষণা হয়েছিল, এবার তা বাস্তবায়নের পথে। ফাইল চিত্র
বেসরকারি স্কুলগুলির খরচ নিয়ে অভিভাবকদের অভিযোগের অন্ত নেই। তাই এ বার স্বাস্থ্য কমিশনের ধাঁচে শিক্ষা কমিশন তৈরি করে অভিভাবকদের যাবতীয় অভিযোগের সুরাহা দিতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। সদ্যসমাপ্ত রাজ্য বিধানসভার বাদল অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এই বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সূত্রের খবর, জুলাই মাসেই রাজ্য সরকার শিক্ষা কমিশন গঠনের কথা ঘোষণা করতে পারে। একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে সেই কমিশনের মাথায় রাখা হবে। সঙ্গে রাখা হবে সরকার মনোনীত শিক্ষা বিষয়ক প্রতিনিধিদের। ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভা এ ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি হবে বলেই বিকাশ ভবন সূত্রে খবর। ছেলেমেয়েদের ভাল শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যেই অভিভাবকরা বেসরকারি স্কুলের দ্বারস্থ হন। কিন্তু, সেই সুযোগে বেসরকারি স্কুলগুলি যেভাবে দিন দিন পড়াশোনার খরচ বৃদ্ধি করছে, তাতে এই শিক্ষা কমিশন তৈরি আবশ্যিক হয়ে পড়েছে বলেই মন্তব্য করেছেন স্কুল শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক।
কলকাতা শহর সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলে যখন তখন ফি বৃদ্ধি নিয়ে অভিযোগ ওঠে প্রায়শই। মূলত এই ধরনের সমস্যা খতিয়ে দেখার জন্যই শিক্ষা কমিশন তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা দফতরের ওই আধিকারিক। প্রসঙ্গত, বেসরকারি হাসপাতালের খরচ থেকে শুরু করে চিকিৎসায় গাফিলতি অন্য কোনও অভিযোগ থাকলে, তার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয় স্বাস্থ্য কমিশন। বেসরকারি হাসপাতালের স্বেচ্ছাচারিতা রুখতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই কমিশন তৈরি করা হয়েছিল। ঠিক সেই ধাঁচেই একই লক্ষ্য নিয়ে তৈরি হচ্ছে শিক্ষা কমিশন। বেসরকারি স্কুলগুলি বিরুদ্ধে অভিযোগ নিজেদের মর্জিমাফিক মাঝেমধ্যে ফি বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কাটিয়ে স্কুল খোলার পর একাধিক বেসরকারি স্কুল ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর সেই সময় বিভিন্ন স্কুলের বাইরে অভিভাবকদের বিক্ষোভের ঘটনাও নজরে এসেছে রাজ্য সরকারের। কিছু ক্ষেত্রে তো পুলিশ প্রশাসনকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। অভিভাবকদের ক্ষোভের জেরে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত পৌঁছেছিল। সেই সময় রাজ্য সরকার শিক্ষা কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষা দফতর এক আধিকারিকের কথায়, "আমরা সরাসরি বেসরকারি স্কুল নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। তবে, কোনও অভিযোগ থাকলে স্বাস্থ্য কমিশন যেমন কাজ করে, শিক্ষা কমিশনও মানুষের স্বার্থে সেই কাজ করতেই পারে। কমিশন তৈরির কথা আগেই ঘোষণা হয়েছিল, এবার তা বাস্তবায়নের পথে।"