ফাইল ছবি
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অহরহ বঞ্চনার অভিযোগ তো আছেই। সেই সঙ্গে প্রাপ্যটুকুও দেওয়া হচ্ছে না বলে সরব নবান্ন। সব মিলিয়ে রাজ্যের ভাঁড়ে মা ভবানীর দশা আর গোপন নেই। এই অবস্থায় নবান্নের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে পর্যবেক্ষকদের মধ্যে জল্পনা দানা বেঁধেছে, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিই কি বিদ্যুতের খরচ বাঁচাতে রাজ্য সরকারকে বেশি মাত্রায় সৌরশক্তি ব্যবহারের দিকে যেতে বাধ্য করাচ্ছে!
রাজ্যের সিদ্ধান্ত, আরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিসকে সৌর বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর আওতায় আনা হবে। সব জেলাকে তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারের যুক্তি, যত বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিসে এমন পরিকাঠামো তৈরি করা যাবে, ততই বাঁচানো যাবে বিদ্যুতের খরচ। রাশ টানা যাবে পরিবেশ দূষণেও। অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, সৌর বিদ্যুতের পরিকাঠামো সাধারণ গ্রাহকদের কাছেও সহজলভ্য করা গেলে তবেই সুদূরপ্রসারী সুফল মিলবে।
সরকার জেলাগুলিকে জানিয়েছে, ২০১১ থেকে এ-পর্যন্ত স্কুল, কলেজ ও সরকারি অফিস মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার ভবনে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। সেগুলি বিদ্যুৎ গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত। নবান্ন মনে করছে, আরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিসকে এর আওতায় আনা জরুরি। তার মূল কারণ চারটি। ১) বিদ্যুৎ বিলের বোঝা কমানো। ২) কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে দূষণ ঠেকানো। ৩) জল সংরক্ষণ। ৪) পরিবেশ রক্ষায় সৌরশক্তি ব্যবহারের ব্যাপারে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকদের সচেতন করা। তাই ‘১০০০ স্কুল’ পরিকল্পনার আওতায় ২৩টি জেলার স্কুলগুলিকে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ১০ কিলোওয়াটের সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। জেলাকে সরকারি অফিসের তালিকাও পাঠাতে বলা হয়েছে। এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “এই প্রকল্পের কাজ সরকারি তহবিল থেকেই হয়ে থাকে। বছরে ১০০-২০০টি স্কুলে এই পরিকাঠামো তৈরির কথা আছে।’’
প্রশাসনের এক কর্তার ব্যাখ্যা, ২৩টি জেলার ১৯৫৪টি স্কুল মিলিয়ে ১২,৭৫৫ কিলোওয়াটের সৌর বিদ্যুৎ পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। তাতে প্রায় ১৬.৯৭ লিটার জল বাঁচানো যাচ্ছে, ‘গ্রিনহাউস’ গ্যাসের নিঃসরণ কমেছে প্রায় ৪৪.৬২ কোটি কেজি।