রবিন কাজি হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন অরবিন্দ বাউরি ওরফে দীনবন্ধু (দীনু) বাউরি। —নিজস্ব চিত্র।
১১ বছর পর জামুরিয়ার তৃণমূলকর্মী রবিন কাজি হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত অরবিন্দ বাউরিকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দিল আদালত। বুধবার অরবিন্দের বিরুদ্ধে এই সাজা ঘোষণা করেন আসানসোল আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (২) শরণ্যা সেন প্রসাদ। সেই সঙ্গে তাঁর ১০ হাজার টাকার জরিমানাও করা হয়েছে। বিচারকের নির্দেশ, যা অনাদায়ে ৬ মাস জেলে কাটাতে হবে দোষীকে।
আসানসোল তথা রাজ্যে শোরগোল ফেলে দেওয়া এই খুনের মামলায় আগেই অরবিন্দ বাউরি ওরফে দীনবন্ধু (দীনু) বাউরিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আসানসোলের আদালত। বুধবার ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ নম্বর ধারায় তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন বিচারক।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী বিনয়ানন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২০১১ সালের ৪ এপ্রিল জামুরিয়ার বাড়ুল গ্রামে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে খুন হয়েছিলেন তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের নেতা রবিন কাজি। জামুরিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রাথী প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে সে দিন নির্বাচনী প্রচার চলছিল। সে সময় তৎকালীন সিপিএম নেতৃত্ব তাঁদের বাধা দেন বলে অভিযোগ। তখন দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছিল। সেখানেই প্রভাত চট্টোপাধ্যায়কে বাঁচাতে গিয়ে রবিন কাজির মাথায় আঘাত লাগে। কেউ সম্ভবত তাঁর মাথায় আঘাত করেন। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অরবিন্দ বাউরি একটি চার চাকার গাড়ি রবিনের উপর দিয়ে বার বার চালিয়ে দেন।’’
ওই ঘটনার পর রবিনের পরিবারের তরফে জামুরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল। সে সময় ওই ঘটনা নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খুনের ঘটনার তদন্ত করে সে রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন তৎকালীন জামুরিয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বিকাশ দত্ত। তদন্তে নেমে অরবিন্দকে গ্রেফতারও করেছিলেন তিনি। পরে অন্যান্য পুলিশ আধিকারিক তদন্তে নেমে আরও ২৩ জনকে অভিযুক্ত করেন। তার মধ্যে সিপিএম নেতার নাম ওই মামলায় জুড়ে যায়। সেই থেকেই মামলা চলছিল।
সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘এই মামলায় মোট সতেরো জন সাক্ষী দিয়েছিলেন। প্রায় সব সাক্ষীই একমাত্র অরবিন্দ বাউরির নামেই অভিযোগ করেন। মামলা চলাকালীন দু’জন অভিযুক্ত মারা যান। বাকি একুশ জন ছাড়া পেয়ে যান। কেবল মাত্র অরবিন্দ বাউরি দোষী সাব্যস্ত হন।’’