কেরলে প্রতিটি জেলা লাগানো হয়েই এই ধরনের হোডিং। নিজস্ব চিত্র
বামশাসিত কেরলের জেলায় জেলায় এ বার হোর্ডিং পড়ল ‘দিদি’র নামে। তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে যে সমস্ত হোর্ডিংয়ে লেখা হয়েছে, ‘কল দিদি, সেভ ইন্ডিয়া, দিল্লি চলো’। অর্থাৎ, দিদিকে ডাকো, দেশ বাঁচাও, দিল্লি চলো। যা দেখে বঙ্গবাসী অনেকেরেই মনে পড়ে যাচ্ছে, ভোটের বেশ কয়েক মাস আগে প্রশান্ত কিশোর বিরচিত তৃণমূলের স্লোগান— ‘দিদিকে বলো’।
মমতার নামে ওই স্লোগান দিয়ে বামশাসিত কেরলে সংগঠন বিস্তারের কাজ শুরু করেছে তৃণমূল। তৃতীয়বার বাংলায় ক্ষমতায় আসার পরেই ভিন্ রাজ্যে সংগঠন বাড়ানোর কাজে মন দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তিনি বলেছেন, শুধু সংগঠন বিস্তার নয়, তাঁরা চান রাজ্যে রাজ্যে সরকার গঠন করে সেখানকার মানুষকে পরিষেবা দিতে।
ত্রিপুরা ও অসমের মতো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির পাশাপাশি দক্ষিণের রাজ্য কেরলেও নজর রয়েছে তৃণমূলের। বিধানসভা ভোট শেষের পরেই জুন মাসে কেরল তৃণমূলের নেতারা কলকাতায় এসে তৃণমূলের এক শীর্ষনেতার সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন। ওই শীর্ষনেতার কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই কেরলে সাংগঠনিক কাজে গতি এনেছেন তাঁরা। মঙ্গলবার এর্নাকুলামে দলের সাংগঠনিক বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই ৫১ জনের কমিটির গড়া হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বামফ্রন্ট শাসিত রাজ্যে মমতার সরকারের জনমুখী কাজের প্রচার করবে তৃণমূল। তুলে ধরা হবে বাংলায় সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াইয়ের তিন দশকের কথাও।
কেরলে তৈরি হল তৃণমূলের ৫১ জনের রাজ্য কমিটি।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে কেরলে পাঁচটি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু ইতিমধ্যেই সেখানে ৫১ জনের কমিটি গড়ে জেলা ও ব্লকস্তরের সংগঠন তৈরির পক্ষপাতী তাঁরা। এর্নাকুলামে অনুষ্ঠানে তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়ে যোগদান করেন বহু রাজনৈতিক কর্মীরা।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে তৃণমূল এখন থেকে ঘুঁটি সাজাতে চাইছে। আর সেই কারণে রাজ্যের বাইরেও সংগঠন বিস্তারে জোর দিচ্ছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।কেরলের মোট ১৪টি জেলাতেই সংগঠন তৈরি করতে চায় কেরল তৃণমূল। তাই নতুন স্লোগান ঠিক করে জেলায় জেলায় হোর্ডিং দেওয়া হয়েছে। ‘কল দিদি, সেভ ইন্ডিয়া, দিল্লি চলো’ স্লোগানের সঙ্গে কেরল তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি মনোজ শঙ্করেন্নালুর প্রতিটি হোর্ডিংয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি এবং সঙ্গে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়েছেন।
সংগঠন বিস্তারে মোবাইল নম্বর ব্যবহার নিয়ে মনোজ বলেন, ‘‘এখন যোগাযোগের যুগ। কেরলের মতো রাজ্যে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সংগঠন গড়তে গেলে প্রযুক্তির ব্যবহার করতেই হবে। তাই আমি প্রত্যেক হোর্ডিংয়ে নিজের মোবাইল নম্বরের ব্যবহার করেছিলাম। আগামী তিন বছরে আমাদের সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। তাই দিদিকে দিল্লি পৌঁছে দেওয়ার স্লোগানকে সামনে রেখেই আমরা সংগঠন বাড়ানোর কাজে জোর দিয়েছি।’’