TMC

Tripura TMC: ত্রিপুরার পর নজর অসমে, সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের নেতাকে দলে চায় তৃণমূল

অখিল গগৈয়ের প্রতিনিধিরা দু’বার কালীঘাটের দফতরে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানেই তাঁদের তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২১ ১১:৫০
Share:

মধ্য চল্লিশের অখিল গত দু’দশক ধরে সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। অসমের এমন জনপ্রিয় নেতাকে দলে পেতে চাইছে তৃণমূল। গ্রাফিক — শৌভিক দেবনাথ।

অসমের সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের নেতাকে দলে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে তৃণমূল। যা থেকে মনে করা হচ্ছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে সংগঠন বিস্তার করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা নিয়ে ময়দানে নেমেছেন অভিষেক। মমতাও ত্রিপুরা সফরে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এর পর তৃণমূল নেতৃত্ব নজর দিচ্ছেন অসমের দিকে।

সূত্রের খবর, অসমের শিবসাগরের বিধায়ক তথা রাজৌর দলের নেতা অখিল গগৈকে দলে যোগদানে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের তরফে। সূত্রের খবর, রাজৌর দলের প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই দু’বার কলকাতায় এসে কালীঘাটের দফতরে তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছেন। সেই বৈঠকে প্রথমে তাঁদের সরাসরি তৃণমূলে যোগদানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিকল্প পথ হিসেবে দলের সরাসরি যোগ না দিলেও অসমে জোট গড়ে ভোটের লড়াইয়ে প্রস্তাব রয়েছে। অসমের রাজনীতিতে অখিল পরিচিত নাম। মধ্য চল্লিশের অখিল গত দু’দশক ধরে সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। ‘ইন্ডিয়া এগেনস্ট করাপশন’ সংগঠনকে সামনে রেখে ভারতীয় রাজনীতিতে দুর্নীতি রুখতে অসমে ব্যাপক আন্দোলন করেছিলেন তিনি। ওই রাজ্যের কৃষকদের দাবি আদায়ের জন্য ‘কৃষক মুক্তিসংগ্রাম সমিতি’ গড়েও সরব হয়েছিলেন। এছাড়াও, তথ্যের অধিকার আইন নিয়েও উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে তাঁর।

Advertisement

অসমের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁর আত্মপ্রকাশ ২০১৯ সালে মোদী সরকারের আনা নাগরিক সংশোধনী আইনের বিরোধী আন্দোলন করে। সেই আন্দোলনের জেরে কারাবাসও করতে হয়েছিল তাঁর। ২০২১ সালে অসমের বিধানসভা নির্বাচনে রাজৌর দলের হয়ে বেশকিছু প্রার্থীও দিয়েছিলেন অখিল। শিবসাগর কেন্দ্র থেকে নিজে জিতলেও বাকি কোনও কেন্দ্রে তাঁর দলের কোনও প্রার্থী জয়লাভ করেননি। তবে অসমের এমন একজন জনপ্রিয় নেতাকে দলে পেতে চাইছে বাংলার শাসক তৃণমূল। তৃতীয়বার পশ্চিমবঙ্গ দখলের পর ভিন রাজ্যে সংগঠন বাড়ানোর দিকে মন দিয়েছে তৃণমূল। সেক্ষেত্রে প্রাধান্য পাচ্ছে উত্তর পূর্বাঞ্চলের দু’টি বিজেপি-শাসিত রাজ্য ত্রিপুরা ও অসম। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে যাতে এই দুই রাজ্যে ভাল সংগঠন তৈরি করা যায়, সেই লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষে।

তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের যে কলকাতায় দু’দফায় বৈঠক হয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন রজৌর দলে অখিল-ঘনিষ্ঠ নেতা অম্লানজ্যোতি গগৈ। বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে, পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল আমাদের তাদের দলে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কলকাতায় দু’বার আমাদের সঙ্গে তাদের বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু এখনও কিছুই চূড়ান্ত নয়। আলাপ-আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে অবশ্যই তা প্রকাশ্যে জানানো হবে।’’ প্রসঙ্গত, নাগরিক সংশোধনী বিল সংসদে আনার আগে থেকেই তার বিরোধিতা করে আসছিল তৃণমূল। সংসদে তা পাশ হওয়ার পরও সিএএ নিয়ে সুর নরম করেনি মমতার দল। তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব মনে করছেন, তাঁদের সিএএ-বিরোধী অবস্থান অসমের রাজনীতিতে ‘সহায়ক’ হতে পারে। তাই অসমে তাঁদের দলে অখিলের মতো সংগঠককে পেলে তৃণমূলের সংগঠন বিস্তারে সুবিধাই হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement