ছবি: পিটিআই।
নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় একক ভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যেতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে কংগ্রেসের ভূমিকায় তিনি এখনও সন্তুষ্ট নন। দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠকে এই ইঙ্গিত দিয়ে দ্বিতীয় দফার কর্মসূচি স্থির করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। এই পর্যায়ে রাজ্যের মতুয়া-অধ্যুষিত অঞ্চল বনগাঁ ও রানাঘাটে তিনটি সভা করবেন তিনি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরোধিতায় দলের প্রচারকে একেবারে বাড়ি বাড়ি নিয়ে যেতে চাইছে তৃণমূল। দলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতিদের বৈঠকে এই নির্দেশই দিয়েছেন এ দিন তৃণমূল নেত্রী। সংসদে নাগরিকত্ব বিল পাশ হওয়ার সময় থেকেই তার বিরোধিতায় পথে নেমেছে তৃণমূল। মমতা নিজেই কলকাতা ও জেলায় একাধিক বড় পদযাত্রা করেছেন।এ বার তা আরও নিচু তলায় নিয়ে যেতে বুথ পর্যন্ত কর্মসূচি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে মমতা বুঝিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে তাদের অবস্থান জানানোর আগে পর্যন্ত দ্বিতীয় দফার প্রচারকে আরও জোরদার করতে চান তিনি। সেই সঙ্গেই দলের বৈঠকে মমতার বার্তা, তিনি একা সব করে দিতে পারবেন না! দলের প্রত্যেককে এই প্রচারের কাজে নামতে হবে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সিএএ, এনপিআর এবং এনআরসি নিয়ে কংগ্রেসের ভূমিকায় তিনি সন্তুষ্ট নন বলে বৈঠকে বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। অন্য দলের দিকে না তাকিয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে দলকে এই পর্যায়ের কর্মসূচি সেরে ফেলতে বলেছেন তিনি। ঠিক হয়েছে, ১-২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের সব ব্লকে প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে। সর্বত্র ৫ তারিখ ‘মানববন্ধন’, সব ব্লকে ৬ তারিখ মৌনী মিছিল এবং ৭ তারিখ সব বিধানসভা অঞ্চলে পথসভার কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। জনপ্রতিনিধিরা ৮ ও ১০ তারিখ তফসিলি জাতি ও জনজাতি অংশের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনপিআর, এনআরসি এবং সিএএ সম্পর্কে দলের বক্তব্য জানাবেন। সেই সঙ্গেই তৃণমূলের উদ্বাস্তু শাখার উপরেও রাজ্যের উদ্বাস্তু অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই কর্মসূচির পাশাপাশি ২৬ তারিখে সাধারণতন্ত্র দিবস এবং ৩০ গাঁধীজির প্রয়াণ দিবসের কর্মসূচি পালন করা হবে।’’
আরও পড়ুন: দিলীপের ‘নেতৃত্বে’ মেডিক্যাল কলেজ, চিঠি দিল কেন্দ্র! হতবাক নবান্ন
তৃণমূল ভবনে এই বৈঠকেই জেলাভিত্তিক সাংগঠনিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে হয়েছে। উত্তরবঙ্গে দলের সাংগঠনিক তৎপরতায় খামতি রয়েছে বলেও মনে করছেন মমতা। তার ভিত্তিতেই কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের মতো জেলায় গোষ্ঠী-বিরোধ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন স্থানীয় নেতাদের। উত্তরবঙ্গ থেকে এ দিনই কলকাতায় ফিরে এই বৈঠকে এসেছিলেন তিনি। সেখানেই মমতার অভিযোগ, উত্তরবঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও অন্য অনেক নামে বিভিন্ন ভাবে টাকা ছড়াচ্ছে বিজেপি। দলের নেতারা যেন কোনও ভাবেই বিজেপির কোনও ‘ফাঁদে’ পা না দেন, সে ব্যাপারেও সতর্ক করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।