মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
তৃণমূল কংগ্রেসে ‘সাফাই’ ও ‘সংস্কারে’র রাশ নিজের হাতে নিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রদবদলের লক্ষ্যে শুরু পরামর্শদাতা সংস্থার কাজ হঠাৎ বন্ধ রাখতে বলেছেন তৃণমূল নেত্রী। দলীয় সূত্রে খবর, পুজোর আগে এই কাজ নিয়ে এগোতে চাইছেন না তিনি।
লোকসভা ভোটের পরেই দল, পঞ্চায়েত ও পুরসভায় বড় রকমের রদবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু আর জি কর হাসপাতাল ঘিরে যে ‘ঝড়’ তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে সংগঠনে হাত দিতে চাইছেন না তৃণমূল নেত্রী। এই ব্যাপারে দলের পরামর্শদাতা সংস্থা জেলায় জেলায় আলাদা ভাবে সমীক্ষাও শুরু করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি মমতা নিজেই পরামর্শদাতা সংস্থাকে এ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। সেই সঙ্গে তাদের আরও জানিয়ে দিয়েছেন, এই ব্যাপারে কিছু করার থাকলে তিনিই তাদের জানাবেন। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘আর জি কর হাসপাতালের ঘটনাপ্রবাহে একটা রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় সংগঠন নিয়ে দলনেত্রী একটু ধীরে এগোতে চাইছেন।’’
মমতার নির্দেশে আপাতত বন্ধ রাখা এই সমীক্ষাটি ছিল পুরসভার দায়িত্ব বদল নিয়ে। পরামর্শদাতার সংস্থার তরফে বেশি কিছু দিন আগেই এই সমীক্ষা শুরু করা হয়েছিল। তার মধ্যেই আর জি কর হাসপাতাল নিয়ে এই অস্থিরতা তৈরি হয়। দলীয় সূত্রে খবর, এই সমীক্ষায় এলাকা-ভিত্তিক পুরপ্রধান ও উপ-প্রধানদের সম্পর্কে তথ্য ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে কোথাও এই দুই পদে বদল করা হলে কাকে দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে মতামত যাচাই করা হচ্ছিল। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘লোকসভা ভোটে পুর-অঞ্চলে দলের ফল খারাপ হয়েছে। সেই কারণেই বিধানসভা ভোটের আগে এই সব জায়গায় রদবদলের সিদ্ধান্ত মাস তিন আগেই নেওয়া হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, একুশে জুলাই ধর্মতলার সভা-মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই সে কথা ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতোই কাজ করছিলপরামর্শদাতা সংস্থা।
তৃণমূলের একাংশের মতে, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের সঙ্গে ‘টানাপড়েনে’র জেরেই এই কাজে সতর্ক হয়ে পা ফেলতে চাইছেন মমতা। সে ক্ষেত্রে পুজোর আগেই একাধিক পুরসভায় পুরপ্রধান ও উপ-প্রধান বদলের পরিকল্পনা থাকলেও আপাতত তা নিয়ে দোলাচল তৈরি হয়েছে। একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পঞ্চায়েত স্তরে রদবদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে।
পরামর্শদাতা সংস্থা অবশ্য রাজ্য সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প সম্পর্কিত আর একটি কাজ শুরু করেছে। জেলায় কোথায় রাস্তা তৈরি প্রয়োজন, তা স্থানীয় মানুষ ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে তাদের। তার ভিত্তিতে সংস্থার তরফে দল ও সরকারকে একটি রিপোর্ট দেওয়া হবে।