তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। —ফাইল ছবি।
বিজ্ঞানের অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু বোমায় হয়নি। এমনটাই বললেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। রবিবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বোমা উদ্ধার নিয়ে প্রশ্নে এমনই জবাব দেন তিনি। আর এই মন্তব্য করে পাল্টা বিরোধী শিবিরের আক্রমণের মুখে পড়লেন এই অধ্যাপক রাজনীতিক। সৌগত বলেন, “এটা এমন কোনও ব্যাপার নয়। পশ্চিমবঙ্গে কি এর আগে বোমা পড়ত না? বোমা পাওয়া যেত না সিপিএম বা কংগ্রেসের আমলে? আমাদের মুশকিল হল, বিজ্ঞানের অগ্রগতি হয়েছে। আমরা ষাটের দশকে যে বোমা দেখেছি, সেই একই বোমা রয়ে গিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই একটি কৌটার মধ্যে নারকেলের দড়ি পেঁচিয়ে পটাশিয়াম ক্লোরেট, পটাশ আর আর্সেনিক ট্রাই সালফাইড দিয়ে বোমা তৈরি হয়। আধুনিক বোমা পর্যন্ত এখানে তৈরি হয়নি। বরাবরই এই ছিল। ৬০-এর দশকে দেখেছি। তার আগেও নিশ্চয়ই ৫০-এর দশকেও ছিল।”
দমদমের প্রবীণ সাংসদ বলেন, ‘‘তাই এইসব বোমায় ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।’’ তৃণমূল সাংসদের এমন মন্তব্যে তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
কটাক্ষের সুরে বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ বলেন, “যদি উনি বোমা বিশেষজ্ঞ হন, তাহলে এনআইএ-তে ওনাকে চাকরি দেওয়া উচিত। অবসর তো খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো আর টিকিট দেবেন বলে মনে হচ্ছে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলাতে বিপ্লবীরা বোমা বানিয়ে ইংরেজদের উপরে হামলা করত। আজ সেই বাংলার ঘরে ঘরে বোমা পাওয়া যাচ্ছে, যা ভোট লুঠ করতে, গ্রামের মানুষকে ভয় দেখাতে ব্যবহার হচ্ছে। ওঁর মতো একজন বরিষ্ঠ সাংসদের মুখে কী ভাবে বোমা বানাতে হবে এই শিক্ষা বাংলার যুবক পাচ্ছে। আমার মনে হয় আগামী দিনে দুয়ারে বোমা প্রকল্প তৃণমূল সরকার শুরু করবে।”
তৃণমূলের অধ্যাপক সাংসদকে কটাক্ষ করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সুজন বলেন, ‘‘সৌগত রায় দেখা যাচ্ছে বোমার ফর্মুলার ব্যাপারে খুব এক্সপার্ট। বোমার ফর্মুলা কী হবে, কী ভাবে হবে, আগে কী হত, এখন কী হচ্ছে, ভবিষ্যতে কী হবে… এই সব জানেন। উনি অধ্যাপক। হাতে হাতে টাকা নেওয়ার জন্য এক্সপার্ট এটা সবাই জানত। কিন্তু তিনি যে বোমা তৈরির ফর্মুলা দিতেও এক্সপার্ট হয়ে গিয়েছেন, এটা সবাই হয়ত জানত না।’’