আমেরিকার হাসপাতালে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে অভিষেক। ছবি: সংগৃহীত।
আমেরিকার জন্স হপকিন্স হাসপাতালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখের পরীক্ষা হয়েছে। এর আগে ওই হাসপাতালেই তাঁর চোখের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি এখনকার মতো প্রায় সন্তোষজনক। তবে ছ’মাস পরে আবার তাঁকে যেতে হবে চোখ পরীক্ষা করানোর জন্য। অগস্টের মাঝামাঝি তিনি কলকাতায় ফিরবেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
অভিষেকের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, দেশে ফিরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির বিরুদ্ধে মামলা করার কথা ভাবছেন তৃণমূলের সেনাপতি। বিদেশ থেকেই ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে দীর্ঘ টুইট করে তোপ দেগেছিলেন অভিষেক। সেই সূত্রেই বলা হচ্ছে, এ বার তিনি আইনি পদক্ষেপের পথে হাঁটার কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবছেন।
মঙ্গলবার আমেরিকায় অভিষেকের চোখের পরীক্ষা করানোর কথা ছিল। সেইমতোই ওই পরীক্ষা হয়েছে। অভিষেকের সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের একটি ছবি তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে প্রকাশিত হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে আমেরিকার হাসপাতালে বিদেশি চিকিৎসকের সঙ্গে বসে কথা বলছেন তিনি। চিকিৎসকের হাতে কিছু নথিপত্রও রয়েছে। চিকিৎসা সংক্রান্ত সেই নথিটি প্রবীণ চিকিৎসক দেখাচ্ছেন অভিষেককে। ২৬ জুলাই চোখের চিকিৎসা করাতে আমেরিকায় রওনা হয়েছিলেন অভিষেক। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানানো হয়েছিল, দুবাই হয়ে আমেরিকায় যাওয়ার কথা তাঁর। ৮ অগস্ট তাঁর চিকিৎসকের সঙ্গে সাক্ষাৎকার নির্দিষ্ট রয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, অগস্ট মাসের মাঝামাঝি দেশে ফিরে আসবেন অভিষেক। তাঁর পরবর্তী বড় কর্মসূচি ২ অক্টোবর গান্ধীজয়ন্তীতে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে ও রাজ্যের ন্যায্য পাওনা আদায়ের দাবিতে ধর্না। কলকাতায় ফিরে সেই কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু করবেন তিনি।চোখের চিকিৎসার কারণে মাত্র একদিন সংসদের বাদল অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পর বিদেশে যেতে হয়েছে অভিষেককে। তাই নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের উপর বিতর্কেও অংশ নিতে পারছেন না ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার নিউ ইয়র্কের টাইম স্কোয়ারে অভিষেকের তোলা একটি নিজস্বী ঘিরে আলোড়ন উঠেছিল তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। মঙ্গলবারের ছবিটি অবশ্য নিজস্ব নয়। সেটি অভিষেকের সঙ্গে বিশেষজ্ঞের সাক্ষাতের সময় সেখানে উপস্থিত অন্য কারও তোলা।
চিকিৎসার জন্য আমেরিকায় যেতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্ট হলফনামা পেশ করেছিলেন অভিষেক। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, ১৫ জুলাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তিনি তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। সঙ্গে বিদেশযাত্রার অনুমতিও চেয়েছেন। কিন্তু তদন্তকারী সংস্থার তরফে কোনও জবাব না পাওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তার পরেই চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাড়ি দেন অভিষেক। আমেরিকার এই হাসপাতালেই গত বছর অক্টোবর মাসে অভিষেকের চোখের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর বাঁ-চোখের ছবিও দেখা গিয়েছিল সমাজমাধ্যমে। তখন থেকেই অস্ত্রোপচার-পরবর্তী এই পরীক্ষা করানোর কথা ছিল।
২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর মুর্শিদাবাদ থেকে একটি কর্মিসভা করে কলকাতায় ফেরার পথে হুগলি জেলার সিঙ্গুরের দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় অভিষেকের গাড়ি। সেই দুর্ঘটনাতেই তাঁর চোখে আঘাত লাগে। তার পর থেকেই দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর চোখের চিকিৎসা চলছে।