Buddhadeb Bhattacharjee

ফেরার পর কড়া নজরে রাখতে হবে বুদ্ধকে, বলে হাসপাতালে গেলেন মীরা, ধন্যবাদ দিলেন সকলকে

বাড়ি ফিরছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে আপাতত তাঁকে বাড়িতে কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে। বাড়ি থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় এমনটাই জানালেন তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৩ ১০:৫২
Share:

স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যের সঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

বাড়ি ফিরছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বুধবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে আপাতত কড়া নজরদারিতেই রাখতে হবে তাঁকে। বাড়ি থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় এমনটাই জানালেন তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য। তিনি জানান, বুদ্ধদেব বাড়ি ফিরলেও তাঁকে কড়া নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। বুদ্ধদেব যেন সুস্থ থাকেন, সেই জন্য সকলকে আন্তরিক ভাবে প্রার্থনা করার অনুরোধও তিনি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা আন্তরিক ভাবে শুভেচ্ছা জানান। উনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। বাড়িতেও যেন সুস্থ হয়ে থাকতে পারেন। ওঁকে কড়া নজরদারিতে রাখতে হবে।’’ যে ভাবে সবাই বুদ্ধদেবের খোঁজ নিয়েছেন এবং পাশে থেকেছেন, তার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মীরা। সকাল ১১টা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছন তিনি।

Advertisement

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, বাড়ি যাওয়ার পথেও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুদ্ধদেব যখন বাড়ি পৌঁছবেন, তখনও এক জন চিকিৎসক তাঁর বাড়িতে উপস্থিত থাকবেন। বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে বাইপ্যাপ সাপোর্ট দেওয়া না হলেও রাতে আবার বাইপ্যাপে থাকবেন তিনি। বুদ্ধদেব আপাতত এক মাস হোম কেয়ার সাপোর্টে থাকবেন বলেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

বুদ্ধদেবকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার আগে একটি বিবৃতিকে বলা হয়, ‘‘যখন ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন ওঁর শ্বাসকষ্ট ছিল। তন্দ্রাভাব ছিল। পরীক্ষার পর অ্যান্টিবায়োটিক, নেবুলাইজেশন থেরাপি দেওয়া হয়। তাঁর চিকিৎসার জন্য ১১ সদস্যের একটি মেডিক্যাল দল তৈরি করা হয়। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন ওঁকে নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখার। বুদ্ধদেবের ফুসফুসে নিউমোনিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া শনাক্ত করি আমরা। এর পর অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপির বদলও হয়।’’

Advertisement

আরও বলা হয়, ‘‘বিভিন্ন পরীক্ষার পর বুদ্ধদেবের কিছু ওষুধের পরিবর্তন করা হয়। উনি চিকিৎসায় সাড়া দেন। এর পর ৩১ জুলাই তাঁকে মেকানিক্যাল ভেন্টিলেটর থেকে বার করতে সফল হই। পরে তিনি ছিলেন নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে। রাইলস টিউবে খাওয়ানো অব্যাহত থাকে। এর পর অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপির বদলও হয়।’’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বেলার দিকে চিকিৎসকের একটি দল বুদ্ধদেবের বাড়িতে গিয়েছিলেন। অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বিছানা কোথায় থাকবে, কোন জায়গায় রাখলে চিকিৎসার নানাবিধ সরঞ্জাম রাখতে সুবিধা হবে, সব দেখে আসা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুদ্ধদেবের জন্য নতুন বাইপ্যাপের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাঁর যে বাইপ্যাপটি ছিল, সেটি প্রায় সাড়ে তিন বছরের পুরনো। এ ছাড়া একটি ‘কার্ডিয়াক মনিটর’ থাকবে। যার মাধ্যমে অক্সিজেনের মাত্রা (স্যাচুরেশন), রক্তচাপ, হৃদ্‌স্পন্দন দেখা যাবে। যাতে ঠিক ভাবে বুদ্ধদেবের শারীরিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখা যায় এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করা যায়, তাই এই ব্যবস্থা। এ ছাড়া জীবাণুমুক্তকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গত ২৯ জুলাই শ্বাসনালি এবং ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণ নিয়ে আলিপুরের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বুদ্ধদেবকে। গুরুতর সংক্রমণ কাটিয়ে উঠেছেন ৭৯ বছরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সংক্রমণ সারাতে যে চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল, তা যথেষ্টই ধকলের। সেই ধকল তিনি এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেননি বলেই মনে করা হচ্ছে। আগামিদিনে সেই ধকল কাটিয়ে উঠলে তিনি আরও সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement