(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট মিটে গেলেই রাজ্যের দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য দিল্লিতে গিয়ে ধর্না অবস্থান করবে তৃণমূল। এমনটা আগেই জানিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কর্মসূচিতে যে দলের সর্বভারতীয় চেয়ারপার্সন তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অংশ নিতে পারেন, এ বার তার ইঙ্গিত দিলেন তিনি। বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলার বৈদ্যপুরের রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠের খেলার মাঠে জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে দিল্লির কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলছিলেন তিনি।
সেই প্রসঙ্গেই অভিষেক বলেন, ‘‘১০ লক্ষ মানুষ নিয়ে আমরা দিল্লি গিয়ে নিজেদের অধিকারের জন্য ধর্না অবস্থান করব। আগামী মাস দুইয়ের মধ্যেই আমি সব ব্যবস্থা করব। সবাইকে যেতে হবে।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা বলছে দিল্লির পুলিশ নাকি অমিত শাহের পুলিশ। আমাদের ৬ ফুটের লাঠি দিয়ে মারবে। ওদের এত সাহস বাংলার মায়েদের মারবে! ওদের ডান্ডা ভেঙে যাবে, এদের মেরুদণ্ড ভাঙবে না। দিল্লি পুলিশ কেন, আমেরিকা পুলিশ আনলেও, বাংলার মানুষের মেরুদণ্ড ভাঙবে না।’’ এর পরেই অভিষেক বলেন, ‘‘দিল্লির ধর্নায় প্রয়োজনে আমাদের নেত্রীও উপস্থিত থাকবেন।’’
অভিষেকের এই মন্তব্যকে মমতার দিল্লিতে যাওয়ার ঘোষণা হিসেবেই দেখছেন বাংলার রাজনীতিক কারবারিরা। তাঁদের মতে, লোকসভা ভোটের আগে দিল্লির রাজপথে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ধর্নায় বসলে তা অন্য মাত্রা পেতেই পারে। কারণ, বিরোধীদের জোটে বড় ভূমিকা রয়েছে মমতার। পটনার বৈঠক তো বটেই, বেঙ্গালুরুর বৈঠকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হতে চলেছে তাঁর। আর মমতা দিল্লির ধর্নায় উপস্থিত থাকলে, অন্য জাতীয় স্তরের রাজনৈতিক দলগুলিও সেই ধর্নাকে সমর্থন দিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। সঙ্গে বিরোধী দলের নেতারাও মমতার সঙ্গে ধর্নায় সামিল হলে, তা লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বিরোধী ভোটারদের কাছে ইতিবাচক বার্তা দিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই অভিষেকের এই ইঙ্গিতকে মমতার দিল্লিতে ধর্না দেওয়ার ঘোষণা হিসেবেই দেখছেন অনেকে।
দিল্লিতে মমতার ধর্নায় অংশ নিতে যাওয়ার কথা জানানোর পাশাপাশি অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপি ভাইরাস হলে ভ্যাকসিনের নাম তৃণমূল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বিজেপি যত আমাদের বিরুদ্ধে প্রচার করবে, আমরাও আমাদের নেত্রীর কাজকে তুলে ধরে মানুষের কাছে যাব।’’
মঙ্গলবার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, মধ্যপ্রদেশের এক আদিবাসী যুবকের মুখে প্রস্রাব করছেন এক বিজেপি নেতা। সেই প্রসঙ্গ টেনে অভিষেক বুধবার বলেন, ‘‘মধ্যপ্রদেশে এক বিজেপি নেতা একজন আদিবাসী যুবকের মুখে প্রস্রাব করে দিচ্ছেন। এই হচ্ছে বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকার। এই হচ্ছে বিজেপির আদিবাসী প্রেম। এ বার আর জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিজেপি শাসিত রাজ্যে যাবে না। যাবে না কোনও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল।’’ তাঁর আরও আক্রমণ, ‘‘আজ পার্থ চট্টোপাধ্যায় যদি ইডির কাছে না গিয়ে বিজেপির দ্বারস্থ হয়ে যেতেন, তা হলে তিনি ধোয়া তুলসীপাতা হয়ে যেতেন। অনুব্রত মণ্ডল যদি হাতে বিজেপির পতাকা তুলে নিতেন, তা হলে ধোয়া তুলসীপাতা হয়ে যেতেন। মহারাষ্ট্রে অজিত পাওয়ার-সহ ৯ জন বিধায়ক যে মন্ত্রিপদে শপথ নিয়েছেন, তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে ইডির তদন্ত চলছে। এরা ওয়াশিং মেশিন হয়ে গিয়েছে। দুর্নীতি করেছে। আর বিজেপিতে গিয়ে সাদা হয়ে বেরোচ্ছে।’’