Abhishek Banerjee

দিল্লিতে তৃণমূলের হেনস্থা নিয়ে পদক্ষেপের আশ্বাস বোসের, রাজভবন থেকে বেরিয়ে বললেন অভিষেক

দিল্লিতে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের ‘হেনস্থা’ নিয়ে কথা বলার জন্য রাজ্যপালের সময় চেয়েছিলেন অভিষেক। সোমবার রাত ৯টায় সময় দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই মতো রাজভবনে যান অভিষেক-সহ তৃণমূলের ১১ জনের প্রতিনিধি দল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ২১:০০
Share:

রাজভবনে প্রবেশ করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। — নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যপাল কথা দিয়েছেন, কমিশনের সঙ্গে কথা বলবেন। কাজ না হলে মঙ্গলবার আবার আসবেন। রাজভবন থেকে সোমবার রাতে বেরিয়ে এ কথাই জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে হেনস্থা নিয়ে আঙুল তুললেন নির্বাচন কমিশনের দিকে। তিনি অভিযোগ করলেন, নির্বাচন কমিশন বিজেপির বশ্যতা স্বীকার করেছে। মেরুদণ্ড বিকিয়ে দিয়েছে।

Advertisement

দিল্লিতে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের ‘হেনস্থা’ নিয়ে কথা বলার জন্য রাজ্যপালের সময় চেয়েছিলেন অভিষেক। রাত ৯টায় সময় দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই মতো রাজভবনে যান অভিষেক-সহ তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের ১১ জন সদস্য। সেই দলে ছিলেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, শশী পাঁজা, ব্রাত্য বসু, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সৌগত রায়, মালা রায়, অরূপ বিশ্বাস, কুণাল ঘোষ, অসীমা পাত্র। রাজভবন থেকে বেরিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘রাজ্যপালকে বলেছি, আপনি সংবিধানের ধারক-বাহক এ রাজ্যে। রাজ্যপাল কথা দিয়েছেন, মঙ্গলবার কমিশনের সঙ্গে কথা বলবেন। ইমেলে আমাদের জানাবেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজ না হলে মঙ্গলবার আমরা এসে কথা বলব। পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’ এর পরেই তিনি দিল্লির ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। অভিষেক বলেন, ‘‘দিল্লিতে যা হয়েছে, নিন্দনীয়। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। কমিশনের অঙ্গুলিহেলন ছাড়া হতে পারে না। দিল্লি পুলিশকে কাজে লাগিয়ে অসম্মান করা হয়েছে তৃণমূলের সদস্যদের। টেনেহিঁচড়ে ভ্যানে তোলা হয়েছে। এখনও বসিয়ে রেখেছে থানায়।’’ এর জন্য অভিষেক দায়ী করেছেন কমিশনকে। তাঁর কথায়, ‘‘গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে কমিশন।’’

দিল্লির ঘটনা নিয়ে সমাজমাধ্যমে সোমবার একটি পোস্টও দেন অভিষেক। তিনি লেখেন, ‘‘২০২৩ সালের অক্টোবরে দিল্লির কৃষি ভবনের ভিতরে গণতন্ত্রের মুখ বন্ধ করা হয়েছিল। সোমবার প্রকাশ্য দিবালোকে গণতন্ত্রের উপর হামলা চালানো হল। প্রতিদিন বাংলা-বিরোধী জমিদারেরা ক্ষমতার জন্য আরও হিংসাত্মক এবং মরিয়া হয়ে উঠছে। বাংলা এর জবাব দেবে। বিজেপি তৈরি থাকো।’’

Advertisement

সোমবার দিল্লি গিয়ে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলের ১০ জনের প্রতিনিধি দল। কমিশনের কাছে নিজেদের অভিযোগ এবং দাবি জানিয়ে বাইরে এসে ধর্নায় বসে তারা। ২৪ ঘণ্টা ধর্নায় বসার কথা ঘোষণা করেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। কিছু ক্ষণ পরেই সেই ধর্না তুলে দিতে আসরে নামে দিল্লি পুলিশ। সদস্যদের কমিশনের দফতরের সামনে থেকে সরে যেতে বলে পুলিশ। তারা রাজি না হলে পুলিশ জোর করে ধর্না তোলার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি। একে একে বিক্ষোভরত তৃণমূল নেতাদের টেনেহিঁচড়ে পুলিশ বাসে তোলে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের ১০ জনকে আটক করে দিল্লির মন্দির মার্গ থানার ভিতরে রাখা হয়।

ভূপতিনগরে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র ভূমিকা নিয়ে ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলে সোমবার নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। বিকেল ৪টেয় সেই সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই মোতাবেক কমিশনের দফতরে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই দলে ছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহম্মদ নাদিমুল হক, দোলা সেন, সাকেত গোখলে, সাগরিকা ঘোষ, বিবেক গুপ্ত, অর্পিতা ঘোষ, শান্তনু সেন, আবিররঞ্জন বিশ্বাস এবং সুদীপ রাহা। কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দোলা বলেন, ‘‘মোদীবাবু যদি মনে করেন, সবই জমিদারি, কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁদের, তা হলে ভুল করছেন। আমরা কমিশনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। চাই, সমান মাঠে খেলার ব্যবস্থা করুক। বিজেপির জমিদারি যেন বন্ধ হয়। দাবি করেছি, এখনই চার সংস্থার প্রধানকে বদল করা হোক। যাতে বিজেপি ওঁদের খেলার যন্ত্র ভাবতে না পারে।’’

কমিশনের কাছে আরও একটি অনুমতি চেয়ে আর্জি জানিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। মানবিক কারণে যাতে ঝড়বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গে এখনই নতুন ঘর তৈরির অনুমতি দেয় কমিশন, সেই আর্জি জানানো হয়েছে। দোলা বলেন, ‘‘যে কাজ চলছে, তাতে বাধা নেই। কিন্তু নির্বাচনী আচরণবিধি জারি থাকলে নতুন কাজ শুরু করা যায় না। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কমিশন অনুমতি দিলে তবেই নতুন বাড়ি তৈরি করা হবে। মানবিক কারণে কমিশনকে আর্জি জানিয়েছি। আবার ঝড় হতে পারে। মানুষগুলো যাতে খোলা আকাশের নীচে না থাকেন, তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য রাজ্য যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে, তার জন্য কমিশন অনুমতি দিক।’’ এর পরেই ধর্নায় বসে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। সেই ধর্না সরিয়ে সদস্যদের আটক করে দিল্লি পুলিশ। সেই নিয়ে ‘হেনস্থা’-র অভিযোগ তুলে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেকরা। বেরিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন কমিশনকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement