Netaji Subhas Chandra Bose

TMC on Netaji: কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! তাই নেতাজি রহস্যভেদে উদ্যোগী নয় কেন্দ্র, দাবি তৃণমূল মুখপত্রে

কেন্দ্রের নেতাজিপ্রেমকে ‘রাজনৈতিক’ হিসেবে দাবি করার পাশাপাশি সুভাষচন্দ্র বসুকে বর্তমান তৃণমূল সরকারের পথপ্রদর্শক হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:৫৮
Share:

ফাইল ছবি।

নেতাজি-রহস্য উদ্‌ঘাটনে উদ্যোগী নয় মোদী সরকার। সম্প্রতি এই অভিযোগ করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তাঁরই কথার অনুরণন তৃণমূলের মুখপাত্রের সম্পাদকীয় স্তম্ভে। লেখা হল, ‘কেঁচো খুঁড়তে কেউটে’ বেরোনোর ভয়েই নেতাজি রহস্যভেদে আগ্রহ নেই দিল্লির।

সোমবারই ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নাম বাংলার পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ‘‘১৯৪৩ সালে নেতাজি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে শপথ নেন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে। মাথায় রাখতে হবে, সেই সময় অখণ্ড ভারতবর্ষ ছিল। পরাধীন অখণ্ড ভারতবর্ষ। উপনিবেশকালে এটি তিনি করেছিলেন। নিজের ক্যাবিনেট গঠন করেছিলেন। এটি সিলেবাসে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক বা সময়কালীন কোনও প্রশ্ন আছে কি না, সেটা আমরা সিলেবাস কমিটিকে বিবেচনা করতে বলব।’’
পর দিন সকালেই শিক্ষামন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করে সম্পাদকীয় লিখেছে রাজ্যের শাসক দলের মুখপত্র। তাতে এক দিকে যেমন কেন্দ্রের নেতাজিপ্রেমকে ‘রাজনৈতিক’ হিসেবে দাবি করার পাশাপাশি সুভাষচন্দ্র বসুকে বর্তমান তৃণমূল সরকারের ‘পথপ্রদর্শক’ হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, নেতাজি রয়েছেন বাঙালির ভাবাবেগে, বাঙালির ভাবাদর্শে।

Advertisement

এর পরই সম্পাদকীয়তে সরাসরি আক্রমণ করা হয়েছে দিল্লির মোদী সরকারকে। বলা হয়েছে, নেতাজি সংক্রান্ত কোনও ফাইল প্রকাশ্যে আনার আগেই কেন্দ্রের সরকার বলে দেয়, তা স্পর্শকাতর। সম্পাদকয়ীয় স্তম্ভে লেখা হয়েছে, ‘কেন্দ্রীয় সরকার আহাম্মক হতে পারে, ভারতবর্ষের মানুষ নন।’ তৃণমূলের মুখপত্রের সম্পাদকীয়তে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, ‘প্রায় আশি বছর আগের ঘটনার পর পৃথিবীর মানচিত্রটাই বদলে গিয়েছে। অনেক গবেষকই বলছেন, কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরোনোর ভয়।’
রাজধানী দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের পাদদেশে অমর জওয়ান জ্যোতি সরিয়ে সেখানে তৈরি হচ্ছে নেতাজির প্রস্তর মূর্তি। আপাতত প্রযুক্তির সাহায্যে নেতাজির মূর্তি দেখা গেলেও, ভবিষ্যতে তাতে বসবে পাথরের মূর্তি। তা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। নেতাজির জন্মবার্ষিকীতে ধর্মতলায় নেতাজি মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্র রাজনীতির অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘‘অমর জওয়ান জ্যোতি নিভিয়ে, নেতাজির মূর্তি স্থাপন করলেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হয় না। নেতাজির প্রদর্শিত পথে চলেই তাঁকে একমাত্র শ্রদ্ধা জানানো যায়।’’ পাশাপাশি মমতা দাবি করেন, বাংলার চাপেই নেতাজি মূর্তি বসাতে হচ্ছে মোদী সরকারকে। এই প্রসঙ্গে প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীর রাজপথে বাংলার নেতাজির জীবনের উপর তৈরি করা ট্যাবলো বাতিল করা নিয়েও ক্ষোভ গোপন করেননি মমতা। একই সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন নেতাজি সংক্রান্ত বছরভর একগুচ্ছ কর্মসূচিও। দাবি করেছিলেন, নেতাজি সংক্রান্ত সমস্ত ফাইল বাংলার সরকার প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের দিক থেকে তেমন পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হয়নি। তাঁর প্রশ্ন ছিল, কেন নেতাজি-রহস্য প্রকাশ্যে না এনে তাঁকে ঘিরে ক্ষুদ্র রাজনীতি করছে কেন্দ্রের মোদী সরকার? এ বার একই প্রসঙ্গে পাঠ্যক্রমে নেতাজি-কীর্তি অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর দলনেত্রীর করা আক্রমণকেই আরও তীক্ষ্ণ করল তৃণমূলের মুখপত্রের সম্পাদকীয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement