সমীর পাঁজাকে নিয়ে ‘অস্বস্তি’ তৃণমূলে।
ফের বিস্ফোরক সমীর পাঁজা! এ বার তাঁর ক্ষোভ দলের প্রতীকে নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও পঞ্চায়েতস্তরের নেতাদের দিকে। উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক বলেছেন, ‘‘আমি বিধায়ক হওয়ার আগে কী সম্পত্তি ছিল, আর পরে কী হয়েছে, তা দলের নজরে রাখা উচিত। ঠিক সে রকম ভাবে আমাদের প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা কী ছিলেন, এখন কী অবস্থায় রয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হোক।’’
সমীর আরও বলেছেন, ‘‘মনে হয়েছে কোথাও কোথাও প্রধানের পদস্খলন হয়ে দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেছেন, যাঁদের টিকিট দেওয়া হবে, তাঁদের সব কিছু খতিয়ে দেখা হোক। প্রয়োজনে তদন্ত করুক দল।’’ এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে তাঁর মোবাইল ফোনে করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দলীয় বৈঠকে রয়েছি, পরে ফোন করুন।’’ কিন্তু পরে তাঁর মোবাইলে বার বার ফোন করা হলে তিনি ফোন কেটে দিয়েছেন। হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, উদয়নারায়ণপুর এলাকায় এমন কিছু পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান রয়েছেন, যাঁদের ওপর বেজায় ‘ক্ষুব্ধ’ বিধায়ক। আগামী পঞ্চায়েত ভোটে যাতে তাঁদের টিকিট না দেওয়া হয়, সেই ‘বার্তা’ই নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে দিতে চেয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। তবে উদয়নারায়ণপুর বিধায়কের এমন বক্তব্যে ‘খুশি’ নন তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। বিধায়কের বক্তব্য প্রসঙ্গে হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের তরফে তাঁর কাছে ‘বার্তা’ পাঠানো হয়েছে। দল যে সংবাদমাধ্যমে করা তাঁর মন্তব্যকে ভাল চোখে দেখেনি, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। তৃণমূল নেতৃত্বের কথায়, পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কোনও পরামর্শ থাকলে, তা দলের অভ্যন্তরেই জানাতে হবে। এ ভাবে বাইরে বললে চলবে না।
প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বর মাসেই একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করে দলের প্রতি নিজের অভিমান উগরে দিয়েছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, ‘মহান নেত্রী আছেন বলেই, আমি আজও তৃণমূল দল ছেড়ে যাইনি। কারণ কত ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে, নানান ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ৩৮টা বছর মহান এই নেত্রীর সঙ্গে এক জন সৈনিক হিসাবে কাজ করতে করতে এখন বড়ই বেমানান লাগছে নিজেকে।’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘আমার মতো অবিভক্ত যুব কংগ্রেসের আমল থেকে যারা আছে, তারা আদৌ কোনও গুরুত্ব পাচ্ছে কি বর্তমানে?... আমার যাওয়ার সময় হল, দাও বিদায়!’’ যদিও এমন ফেসবুক পোস্টের ‘অপব্যাখ্যা’ করেছে সংবাদমাধ্যম, এমন যুক্তি দিয়ে নিজের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছিলেন তিনি।