হুগলির চুঁচুড়ায় তৃণমূলের এক পুরপ্রতিনিধি নিজের আত্মীয়-পরিচিতদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।
স্কুল ও সরকারি দফতরে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আগেই উঠেছে। রাজ্য দুর্নীতিদমন শাখা তার তদন্ত করছে। এ বার নদিয়ার তেহট্টের সেই তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার নাম জড়িয়ে একটি অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে এসেছে (আনন্দবাজার সেটির সত্যতা যাচাই করেনি)। তাপস সেটি ‘চক্রান্ত’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
ও দিকে, হুগলির চুঁচুড়ায় তৃণমূলের এক পুরপ্রতিনিধি নিজের আত্মীয়-পরিচিতদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন বলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ। তাঁর কটাক্ষ, “এই ধরনের চাকরি বিলি বা বিক্রি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল বাদ দিয়ে ভারতে মনে হয় আর কারও পক্ষে সম্ভব হয়নি।’’
বুধবার বিজেপির তরুণজ্যোতি তিওয়ারি একটি অডিয়ো ক্লিপ টুইট করেন। তাতে ফোনে এক জনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “তাপস সাহা বলছি… প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি যে পরীক্ষা দিয়েছিল, পনেরো দিনের মধ্যে লিস্ট বেরিয়ে যাবে। ...তুমি যদি এখন টাকা চাও সেই টাকা কে দেবে?” আশ্বাসও দেওয়া হয়, “অপেক্ষা করো, টাকা মার যাবে না।” অপর কণ্ঠ বলে, “আপনার কথা শুনব।... প্রবীরদা কিছু বলেনি, হয়রান করছে।”
ঘটনাচক্রে, তাপসের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত প্রবীর কয়ালকে এই মামলায় দুর্নীতিদমন শাখা গ্রেফতার করেছিল। প্রবীর আপাত জামিনে মুক্ত রয়েছেন। ফোনে তিনি দাবি করেন, “আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না। তবে ওটা তাপস সাহারই গলা।” তবে তাপসের দাবি, “ওই গলা আমার নয়। সিপিএম, বিজেপি আর তৃণমূলের নদিয়া জেলা পরিষদ সদস্য টিনা ভৌমিক সাহা চক্রান্ত করে এই কাজ করেছে।” টিনার পাল্টা দাবি, “আমাকে টানছেন কেন? ক্ষমতা থাকলে উনি রাস্তার মোড়ে এসে বলুন, টাকা নিইনি!” সিপিএম এবং বিজেপিও চক্রান্তের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
এ দিন বিকেলে দিল্লিতে সুকান্ত অভিযোগ করেন, “চুঁচুড়া পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরস্বতী পাল বাড়ির কাউকে বাদ রাখেননি। কাজের লোক থেকে বাড়িতে এলআইসি (সরস্বতীর স্বামী সঞ্জয় পাল জীবন বিমা এজেন্ট) করতে আসা লোককেও চাকরি দিয়েছেন।”
পুরসভা সূত্রের খবর, আগের দু’বার সঞ্জয়ই পুরপ্রতিনিধি ছিলেন। তাঁর শ্বশুর, শ্যালিকা, শ্যালক, দুই ভাই, ভায়রাভাই প্রমুখ পুরসভায় কাজ পেয়েছেন। সরস্বতী মানছেন, তাঁর বোনকেও অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দীর্ঘদিন যাঁরা আমাদের দল করছেন, পুরসভায় তাঁদেরই অস্থায়ী কাজ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে আমার আত্মীয়দের কয়েক জনও রয়েছেন।’’