(বাঁ দিকে) উপনির্বাচনে জয়ের পর রসগোল্লার হাঁড়ি হাতে কুণাল ঘোষ। কল্যাণ চৌবে (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
কিউবা বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে সৌরীন সেন লিখেছিলেন, ‘আখের স্বাদ নোনতা’। মানিকতলা বিপ্লবের পর তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ হয়তো লিখতে চাইলেন, ‘রসগোল্লার স্বাদ ঝাল!’
ভোটের আগে যে কথা দিয়েছিলেন কুণাল, ফলঘোষণার পর সেই কথা রাখলেন তিনি। মানিকতলা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডের জয়ের পর বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবের বাড়িতে হাঁড়ি ভর্তি করে রসগোল্লা পাঠালেন কুণালেরা। অনেকের মতে, মোড়কটা সৌজন্যের হলেও আসলে কুণালেরা মিষ্টি পাঠিয়ে রাজনৈতিক ঝালের আস্বাদ দিতে চাইলেন বিজেপি প্রার্থীকে।
কুণাল আগেই বলেছিলেন, মানিকতলায় সুপ্তি যত ভোটে জিতবেন, সেই অনুযায়ী কল্যাণকে গুনে গুনে রসগোল্লা পাঠানো হবে। ফলঘোষণার পর দেখা গিয়েছে, সুপ্তি জিতেছেন ৬২ হাজারের কিছু বেশি ভোটে। কুণালেরা ৬৩টি রসগোল্লা পাঠিয়েছেন কল্যাণের বাড়িতে। শুধু কথার কথা নয়। শনিবার বিকালে কুণালের দূতেরা পৌঁছে যান উল্টোডাঙায় কল্যাণের বাসস্থানে। সেটি একটি বহুতল আবাসন। বাইরের কেউ ঢুকতে গেলে সই করার বন্দোবস্ত থাকে। ওই আবাসনের অফিসে যান কুণালের দূতেরা। সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী ফোনে কথা বলে কুণালের দূতদের জানান, কল্যাণের ফ্ল্যাটে কাউকে তখন যেতে দেওয়া যাবে না। ফলে ওই কর্মীর হাতেই ৬৩টি রসগোল্লা সমেত হাঁড়ি তুলে দেন তৃণমূল কর্মীরা। সেটির ভিডিয়োও করা হয়। তবে সেই রসগোল্লা কল্যাণের ঘর পর্যন্ত পৌঁছেছে কি না, তিনি চেখে দেখেছেন কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।
কল্যাণের আবাসনে রসগোল্লা পৌঁছে দিচ্ছেন কুণালের দূতেরা। ছবি: সংগৃহীত।
সুপ্তি মানিকতলায় প্রার্থী হলেও ভোটের কয়েক দিন আগে থেকেই লড়াইটা কুণাল বনাম কল্যাণে পরিণত হয়েছিল। গত মঙ্গলবার কুণাল একটি অডিয়ো ফাঁস করে দাবি করেন, কল্যাণ তাঁকে ফোন করে প্রস্তাব দিয়েছেন, তিনি যদি বিজেপিকে এই ভোটে ‘সাহায্য’ করেন, তা হলে ক্রীড়াক্ষেত্রে বড় পদ ‘পাইয়ে’ দেবেন। যা কুণালের মতে, সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের পদকে ব্যবহার করে কল্যাণের তাঁকে ‘ঘুষ’ দেওয়ার চেষ্টা। এ নিয়ে ভোটের আগের দিন সরগরম হয়ে ওঠে মানিকতলার রাজনীতি। পাল্টা কল্যাণ সাংবাদিক সম্মেলন করে বিবিধ যুক্তি দিয়েছিলেন। বিজেপি নেতারাও ঘরোয়া আলোচনায় বলতে শুরু করেছিলেন, কল্যাণ রাজনীতির লোক নন বলেই ওই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। কুণালের এক ঘনিষ্ঠ নেতা বলেন, ‘‘দাদা গত মঙ্গলবার হাটে হাঁড়ি ভেঙেছিলেন। শনিবার হাঁড়িভর্তি রসগোল্লা পাঠিয়ে দিলেন।’’