ব্রিগেড সমাবেশের প্রচারে দেওয়াল লিখলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।
রবিবার দলের ব্রিগেড সমাবেশ করার ঘোষণা করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সোমবার থেকেই সেই সমাবেশ সফল করতে ময়দানে নেমে পড়লেন তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতারা। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ১০ মার্চ ব্রিগেডে সমাবেশ করতে চায়। রবিবারই সেই সমাবেশের পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। ১০ মার্চ, রবিবার ‘ব্রিগেড চলো’র ডাক দিয়ে সকাল ১১টা থেকে ‘জনগর্জন সভা’ করার কথা জানানো হয়েছে। তাই সোমবারেই জেলাভিত্তিক প্রস্তুতি সভা করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সভাপতিরা। জেলায় জেলায় তৃণমূল যুব ও ছাত্র সংগঠনের নেতারাও দেওয়াল লিখন থেকে শুরু করে কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন।
এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে সবচেয়ে চর্চিত বিষয় সন্দেশখালি। তাই প্রস্তুতি সভা আয়োজনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলাতেই। এই জেলাতেই সর্বাধিক পাঁচটি লোকসভা আসন রয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে পাঁচটির দু’টি ব্যারাকপুর ও বনগাঁ জিতে নিয়েছিল বিজেপি। আর বারাসত, বসিরহাট ও দমদম আসন জিতেছিল তৃণমূল। সন্দেশখালির ঘটনার প্রভাব যাতে এই পাঁচ আসনে না পড়ে, সে দিকে নজর রেখেই প্রস্তুতি সভার সূচি জারি করেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
জেলায় জেলায় দেওয়াল লিখে জনগর্জন সমাবেশের প্রচার শুরু তৃণমূলের। ছবি: সংগৃহীত।
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্যারাকপুর লোকসভার অধীন বীজপুর, নৈহাটি ও জগদ্দলে প্রস্তুতি সভা করবে তৃণমূল। ২৯ তারিখে সভা হবে বারাসত লোকসভার অধীন হাবড়া, অশোকনগর, বিধাননগর ও রাজারহাট-নিউটাউনে। ১ মার্চ সভা সবচেয়ে বেশি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হবে বসিরহাট, ব্যারাকপুর ও বারাসত লোকসভা এলাকায়। হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, বসিরহাট উত্তর ও দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার পাশাপাশি, সভা হবে মধ্যমগ্রাম, বারাসত, নোয়াপাড়া ও ব্যারাকপুর বিধানসভা এলাকায়। ৩ মার্চ রবিবার প্রস্তুতি সভা হবে সন্দেশখালিতে। সঙ্গে বসিরহাট লোকসভার অধীন মিনাখাঁ, হাড়োয়া, দেগঙ্গা ও ভাটপাড়ায়। ৪ মার্চ বনগাঁ লোকসভার অধীন গাইঘাটায় সভা হবে, বসিরহাট লোকসভার অধীনে প্রস্তুতি সভা হবে বাদুড়িয়া ও স্বরূপনগরে। এ ছাড়াও সভা হবে কামারহাটি, বরাহনগর, দমদম ও রাজারহাট গোপালপুরে। ৫ মার্চ প্রস্তুতি সভার শেষদিনে বনগাঁ লোকসভার অধীন বাগদা এবং বনগাঁ উত্তর ও দক্ষিণ বিধানসভা এলাকায় সভা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পরে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ ব্রিগেডে করেছিল তৃণমূল। এর পরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেও এক বার ব্রিগেড সমবেশ করে তৃণমূল বিরোধী জোটের নেতাদের নিয়ে এসেছিল কলকাতা। কিন্তু এ বারের ব্রিগেড সমাবেশে অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে আমন্ত্রণ জানানোর ইঙ্গিত দেননি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। বেশ কিছু দিন ধরেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে সরব তৃণমূল। রাজ্যের বরাদ্দ আটকে দেওয়ার অভিযোগে কলকাতা থেকে দিল্লি বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ, বিক্ষোভ ধর্না করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ব্রিগেডেও সেই সব দাবিকে সামনে রেখেই সমাবেশ করতে চলেছে তৃণমূল। তবে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই সভা আসলে ভোটের দামামা বাজাতেই।