Illegal Construction

পুর-অধিবেশনে ‘হাতি বাড়ি’ নিয়ে জবাব দিলেন অনন্যা, উল্টে সজলের বিরুদ্ধে আনলেন অভিযোগ

পুর-অধিবেশনে সজল ঘোষ অভিযোগ করেন, যাঁরা বেআইনি নির্মাণ করছেন, তাঁরা টাকা দিলেই সেই বেআইনি নির্মাণকে আইনি করে দেওয়া হচ্ছে। তার জবাব দিলেন অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিম।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৫৩
Share:

(বাঁ দিকে) অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সজল ঘোষ (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘বেআইনি’ ভাবে বাড়ি তৈরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল কলকাতা পুরসভার অধিবেশন। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগর তিরে একে অপরকে বিঁধলেন ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ এবং অন্যন্যা। ‘হাতি বাড়ি’ নিয়ে জবাব দিলেন ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। শুধু তা-ই নয়, সজলের বাড়ি নিয়েও অভিযোগ তুললেন তিনি। বিতর্কে মুখ খুলেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও।

Advertisement

কী নিয়ে বিতর্ক? সজলের অভিযোগ, ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৯৭ নম্বর সন্তোষপুর অ্যাভিনিউয়ে একটি বিরাট ‘অবৈধ’ বাড়ি নির্মিত করেছেন অন্যন্যা। পুর-অধিবেশনে সজল অভিযোগ করেন, যেখানে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে, সেখানেই পুরসভা নোটিস পাঠাচ্ছে। তার পর যাঁরা বেআইনি নির্মাণ করছেন, তাঁরা টাকা দিলেই সেই বেআইনি নির্মাণকে আইনি করে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি অনন্যার বাড়ির প্রসঙ্গ তোলেন। বিজেপি কাউন্সিরের আগেই দাবি করেছিলেন, মিনু রানি ভাওয়ালের থেকে দোতলা বাড়িটি কেনেন অনন্যা ও তাঁর পরিবার। তার পর নতুন বাড়ি তৈরি করে সেটিকে ‘বেআইনি’ ভাবে পাঁচতলা করা হয়। এর পর বাড়ির পিছনের জমিটি কিনে সেখানে ‘অবৈধ’ ভাবে আরও একটি পাঁচতলা বাড়ি তৈরি করে সামনের বাড়িটির সঙ্গে যুক্ত করা হয়। পুরসভার পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘অ্যামালগামেশন’।

সজলের অভিযোগ নিয়ে শুক্রবার সজলের উদ্দেশে অন্যন্যা বলেন, ‘‘অবৈধ অবৈধ অনেক কথাই বলছেন। কোথাও অবৈধের গন্ধ পাচ্ছি না। অ্যামালগামেশন আইনি প্রক্রিয়া।

Advertisement

‘হাতি বাড়ি’তে লিফ্‌ট করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। সে প্রসঙ্গে অন্যন্যা বলেন, ‘‘যখন উপরের তলার অনুমতি দিচ্ছে, তখনই লিফ‌্‌ট বা সিঁড়ির অনুমতি দিয়ে দেওয়া যেত। কিন্তু তখন বোঝা যায়নি সিঁড়ি ভেঙে যাবে। ভেঙে গিয়েছে তাই নতুন করে সিঁড়ি বা লিফ্‌ট করতে হয়েছে। এটা আমার জন্য বিশেষ নিয়ম নয়, এটা কলকাতা পুরসভার অঙ্ক। এটা হিয়ারিং অফিসার করেন।’’

অন্যন্যার বাড়ি প্রসঙ্গে শুক্রবার ফিরহাদ বলেন, ‘‘দু’টি বাড়ির মাঝখানের জায়গার জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়নি। সেই অংশটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাকি অংশের জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। প্রথম অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ১০ অক্টোবর। লিফ্‌ট ও সিঁড়ি রেগুলাইজ করার জন্য ৩২ লক্ষ টাকা জমা দেওয়া হয়েছিল।’’ কলকাতার মেয়রের সংযোজন, ‘‘তৃণমূল কাউন্সিলর (অন্যন্যা) বলে বিরোধীরা এই চিৎকার করছেন। কিন্তু আমরা কোনও রকম অস্বচ্ছ কাজ করছি না। কোথাও বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ এলে নোটিস দেওয়া হয়।’’ অনেকের দাবি, অন্যন্যার বাড়ির নির্মাণ ‘বেআইনি’ বলে স্বীকার করে নিয়েছেন ফিরহাদ।

শুক্রবার অনন্যা সজলের বাড়ি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। শিয়ালদহ এলাকার ১১, ১২, ১৩ নম্বর হুজরি মল লেনের বাড়ির ছবি দেখান অন্যন্যা। তাঁর দাবি, বাড়িটি সজলের। সেই ছবি দেখিয়ে অন্যন্যা দাবি করেন, সজলের বাড়ি পাশের বাড়ি সঙ্গে জোড়া! তাঁর প্রশ্ন, ‘‘দুটো বাড়ির মধ্যে কোনও ছাড়া নেই। কলকাতা পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী, দু’টি বাড়ি ছাড় দিয়ে করতে হয়। তবে ছাড় নেই কেন? উনি (সজল) হয়তো বলবেন, অনেক বাড়ির ছাড় নেই। তা হলে সন্তোষপুর নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন? সব বাড়ির ছাড় যদি না থাকে, তবে সন্তোষপুরেরও ছাড় হত না। উনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এ কাজ করছেন। চালুনি যদি ছুঁচকে বলে তোমার পিছনে ছ্যাঁদা, তা হলে সেটা খুবই কষ্টকর।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement