—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সদ্য হয়ে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় বিধানসভা উপনির্বাচনে তাদের ফল ভাল হবে বলেই মনে করছে শাসক দল। যে চার বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে মানিকতলার জয় সম্পর্কে তৃণমূল কংগ্রেস প্রায় নিশ্চিত। এই আসনটি দলের হাতেই ছিল। বাকি তিনটির মধ্যে রানাঘাট দক্ষিণ এবং বাগদা কেন্দ্রেও ‘ভাল ভোট হয়েছে’ বলে মনে করছেন দলের নেতারা। তবে রায়গঞ্জ নিয়ে বিশেষ আশার কথা শোনা যাচ্ছে না শাসক দলের অন্দরে। অন্য দিকে, বিজেপির অভিযোগ উপনির্বাচনে বিপুল পরিমাণ ‘ছাপ্পা’ এবং ‘ভোট লুট’ করেছে শাসক দল। প্রধান বিরোধী দলের একাংশের মতে, গা-জোয়ারির কারণেই বিজেপির এগিয়ে থাকা তিন আসনে তৃণমূল ব্যবধান কমিয়ে আনতে পারে। আবার বিজেপিরই অন্য একটি অংশের আশঙ্কা, চার আসনই শাসকের ঝুলিতে গেলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না!
তৃণমূলের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘মানিকতলায় বিরোধীরা কার্যত ছিলই না। তা ছাড়া, রাজনৈতিক ভাবে গোড়া থেকেই এই আসনে আমরা এগিয়ে ছিলাম। বুথ ধরে যে প্রস্তুতি ছিল, তার ভিত্তিতে অন্তত ১৫-১৮ হাজার ভোটে জিতব।’’ গত ২০২১ সালে এই কেন্দ্রে অধুনা প্রয়াত সাধন পাণ্ডে জিতেছিলেন ২০ হাজারের বেশি ভোটে। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে সেই ব্যবধান অনেকটাই কমেছিল। বাগদা বিধানসভা আসনে লোকসভা ভোটে ২০ হাজারে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। তবে দলের ভরসা প্রার্থী আর সংগঠনে। জোর লড়াইয়ে এই ব্যবধান ডিঙিয়ে যাওয়ার আশায় রয়েছে তারা। সেই সঙ্গে বিজেপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর গোঁজ প্রার্থী নিয়েও আশাবাদী তৃণমূল। তবে রায়গঞ্জ আসন নিয়ে চিন্তায় রয়েছে তৃণমীল শিবির। লোকসভা ভোটে প্রায় ৪৬ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে থাকা এই আসনে নানা সমস্যা আগেই চিহ্নিত করেছিল তৃণমূল।
বঙ্গ বিজেপির অভিযোগ, উপনির্বাচনে চারটি কেন্দ্রেই তৃণমূল ‘লুট’ চালিয়েছে। যদিও ফলাফল নিয়ে দলে ভিন্ন মত রয়েছে। বিজেপির একটি অংশের দাবি, তৃণমূল একতরফা ভোট করিয়েছে। কার্যত ‘ভোট লুট’ হয়েছে। এর ফলে একটা আসনও বার করা কঠিন বলে মনে হচ্ছে। সেই অংশের ব্যাখ্যা, উপনির্বাচনে শাসক দল অনেক সময়ে ব্যবধান বাড়ানোর জন্য ছাপ্পা দেয়। কিন্তু এ বার পুরোপুরি ‘ভোট লুট’ করেছে। চারটি বিধানসভাই প্রায় পুরোপুরি ‘দখল’ করেছে শাসক দল। বিজেপির অন্য একটি অংশের মতে, মানিকতলায় বিজেপির জেতার কোনও সম্ভবনা নেই। আগের চেয়ে ভোট কমতেও পারে। কিন্তু বাকি তিনটি আসনে গত বিধানসভা ও সদ্যসমাপ্ত লোকসভায় এগিয়েছিল বিজেপি। দলের এই অংশের বক্তব্য, ভোট লুট বা ছাপ্পা দিয়েও পুরো ব্যবধান তৃণমূল মুছে ফেলবে, এমন মনে হয় না। সে ক্ষেত্রে ব্যবধান কমলেও ওই আসনগুলিতে হয়তো তৃণমূল জিততে পারবে না।