মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং রাহুল গান্ধীর পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পটনার বৈঠকে থাকতে পারেন। ফাইল চিত্র।
আগামী শুক্রবারই (২৩ জুন) বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের আমন্ত্রণে পটনায় বিজেপি বিরোধী নেতাদের বৈঠক। সর্বভারতীয় এই উদ্যোগে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম এই তিন দলেরই থাকার কথা। এই মুহূর্তে বাংলার পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে আবার শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে তুমুল ‘যুদ্ধ’ চলছে কংগ্রেস আর সিপিএমের। সেই দ্বন্দ্বের রেশ ধরেই পটনা-বৈঠকের সাত দিন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া বার্তা দিলেন দেশের বৃহত্তম বিজেপি বিরোধী দল কংগ্রেসকে। বাংলায় সিপিএমের সহযোগী কংগ্রেস কখনওই তৃণমূলের সাহায্য প্রত্যাশা করতে পারে না বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন তিনি।
শুক্রবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির শেষ দিন ছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের সভায় মমতা বলেন, ‘‘কংগ্রেস অনেক রাজ্য চালিয়েছে। সিপিএমের সবচেয়ে বড় দোসর। বিজেপির বড় দোসর। আর পার্লামেন্টে (সংসদ) আমাদের সাহায্য চাও। আমরা করব তা-ও বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু মনে রেখো, বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে ঘর করে আমাদের কাছে বাংলায় সাহায্য চাইতে আসবে না।’’
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে বিজেপি, বামেদের পাশাপাশি কংগ্রেস শিবিরও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে। ধারাবাহিক ভাবে হিংসার অভিযোগ তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। অধীরের জেলা মুর্শিদাবাদে এক কংগ্রেস কর্মী এবং এক তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির খুনের ঘটনার ইতিমধ্যেই হাত-জোড়াফুল পরস্পরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে মমতার মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে তৃণমূল নেতাদের একাংশ মনে করছেন।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হারানোর জন্য আগেই আঞ্চলিক দলগুলিকে ‘জায়গা’ ছাড়ার সূত্রের কথা বলেছিলেন মমতা। জানিয়েছিলেন, যে যেখানে শক্তিশালী, সেখানে তাকে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব বিজেপি-বিরোধী ভোটের বিভাজন রুখতে মমতার এই তত্ত্বে সায় দেয়নি। কারণ ওই সূত্র মেনে তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টিকে জায়গা ছাড়তে গেলে লোকসভায় অর্ধেক আসনেই প্রার্থী দিতে পারবেন না রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গেরা।
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার কংগ্রেসকে মমতা সরাসরি বিজেপি এবং সিপিএমের ‘দোসর’ বলায় বিতর্ক অন্য মাত্রা পেল। পটনার বিরোধী বৈঠকে তিনি নিজে থাকবেন বলে জানিয়েছিলেন মমতা। কংগ্রেসের তরফ থেকে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে রাহুল গান্ধীও বৈঠকে থাকতে পারেন বলে খবর। সিপিএমের পক্ষে থাকতে পারেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।